সদ্য ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছনো ক্রিস গেইলকে দেখে কে বলবে, বিশ্বকাপ রেকর্ডের অধরা শৃঙ্গ জয় করে উঠলেন ক্যারিবিয়ান দানব। হেলমেট খুলে চুল একটু ঠিক করা, তার পর হাঁটু গেড়ে বসে বাইশ গজের কাছাকাছি কয়েকটা সেকেন্ড। লাফালাফি নেই, বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই। শুধু ঠোঁটে এক চিলতে হাসি আর চোখমুখে অপার স্বস্তি!
স্বস্তির কারণ ম্যাচের পর নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন গেইল। বলেছেন, ইদানীং রান-খরার জন্য প্রচণ্ড চাপে ছিলেন। তার উপর আবার চলেছে তাঁকে নিয়ে নানান টিটকিরি। গেইল নাকি দেশের জার্সিতে রান করার জন্য অর্থ দাবি করেন— এ রকম মন্তব্য রিটুইট করেছেন ক্যারিবিয়ান বোর্ড প্রেসিডেন্ট স্বয়ং!
“প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। রান আসছিল না। তবে কেরিয়ারে এই প্রথম এত মানুষ চাইছিলেন আমি রান পাই। টুইটারে একের পর এক মেসেজ পাচ্ছিলাম। রোহিত শর্মা দুটো ডাবল সেঞ্চুরি করার পরে ফ্যানরা আমাকে প্রচুর টুইট করেছিল। সবাই আশা করছিল আমিও ডাবল সেঞ্চুরি করব,” বলে গেইল আরও যোগ করেছেন, “চার ফিল্ডারের নিয়ম চালু হওয়ার পর মনে হয় মাত্র একটা হাফসেঞ্চুরি করেছি। আমি ঠিক করে রেখেছিলাম একশো পেরোতে পারলেই বড় স্কোরের দিকে যাব।”
ঘরের মাঠে ২০১৩ জুনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করেন গেইল। তার পরের ১৯ ম্যাচে ১৪.৪২ গড় নিয়ে এসেছে মাত্র ২৭৪। একটা হাফসেঞ্চুরি। তার উপর বয়স আর চোটের জোড়া চ্যালেঞ্জ। ২০১৩-র নভেম্বরের পর হ্যামস্ট্রিং আর কোমর ভুগিয়েছে তাঁকে। “অনেকেই আমাকে মাঠে দেখে বুঝতে পারে না আমি কী অবস্থায় রয়েছি। চোট নিয়ে প্রচণ্ড ভুগেছি। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি যে ভাল ভাবে করব, সেই উপায়ও ছিল না। তা ছাড়া বয়সও তো আর কমছে না!” ব্যক্তিগত তৃপ্তির পাশাপাশি গেইলের চিন্তায় রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমও। তিনি বলে দিচ্ছেন, “এই জয়টা দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগে আমাদের ভাল মোমেন্টাম দেবে। আরও এগোতে হবে আমাদের।”
মঙ্গলবার ১৪৭ বলে আসা ২১৫-র ইনিংস থেমে যেতে পারত প্রথম বলেই, যখন তাঁর বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের আবেদন ওঠে। ফিল্ড আম্পায়ার নট আউট সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর রিভিউয়ে ঘোষণা হয়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা মাঠের আম্পায়ারই নেবেন। ওই সময় তিনি যে বেশ নার্ভাস ছিলেন সেটা জানিয়ে গেইল বলেছেন, “ইনিংসের শুরুর দিকে বেশ স্ট্রাগল করেছি। প্রথম বলটা তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। প্রথম বলে আউট হয়ে যাব, বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। একটা সুযোগ দরকার ছিল। সেটা পেলাম, আর বেশ ভাল ভাবে কাজেও লাগিয়ে ফেললাম!”
গেইলের ডাবল সেঞ্চুরি এল জালন্ধরের ব্যাটে
সংবাদ সংস্থা • জলন্ধর
মঙ্গলবারের ডাবল সেঞ্চুরির পর ক্রিস গেইলের ধন্যবাদ প্রাপ্য হরভজন সিংহর শহর জালন্ধরের। কারণ, ওই শহরেই তৈরি হয়েছে তাঁর ব্যাট। এই শহরের স্পার্টান স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি ব্যাটেই এ দিন এই স্মরণীয় ইনিংস খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ব্যাটসম্যান। ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও একই ব্যাটে খেলেন। বিশ্বকাপের আগেই তাঁর অনুরোধ অনুযায়ী তৈরি ১৫টি ব্যাট গেইলকে পাঠিয়েছিলেন বলে জানালেন এই সংস্থার কর্ণধার অমিত শর্মা। “গেইলের উচ্চতা বেশি বলে ওর ব্যাটের দৈর্ঘ্যও কিছুটা বেশি রাখতে হয়। ওর ব্যাটের ওজনও বেশি”, বলেন অমিত। বিশ্বকাপে তাঁদের সংস্থায় তৈরি ব্যাট ব্যবহার করছেন মাইকেল ক্লার্ক, ইয়ন মর্গ্যান, ডোয়েন ব্র্যাভো ও মিচেল জনসনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy