এক দশক ধরে তিনি ইংল্যান্ডের এক নম্বর স্ট্রাইকার। ২০০৩-এ সতেরো বছর বয়সে জাতীয় দলের হয়ে করা তাঁর প্রথম গোল ইংল্যান্ডকে ইউরো কাপ খেলার যোগ্যতা দিয়েছিল। গত অক্টোবরে ‘থ্রি লায়ন্স’-এর জার্সিতে করা তাঁর শেষ গোল (৮৯ ম্যাচে ৩৮তম) পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২-০ জয়ের মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে দিয়েছিল ২০১৪ বিশ্বকাপের টিকিট। সেই ওয়েন রুনি ব্রাজিলে নিজেদের দলের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে মেসি-রোনাল্ডো সব বিষয়ে অকপট ইংল্যান্ডের বিখ্যাত দৈনিকের সামনে।
প্রশ্ন: ইংল্যান্ডের জার্সিতে প্রায় এক যুগ আগে অভিষেকের দিনগুলোতে আপনাকে বলা হত ‘টিনএজ টেরর’। আঠাশ বছর বয়সে এ বার ব্রাজিলে আপনি প্রতিপক্ষদের সামনে কতটা আতঙ্কের হয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করেন?
রুনি: দেশের হয়ে দেড়শো ম্যাচ খেলে ফেলেছি আমি। কিন্তু সাফ বলছি, দেড়শো ‘ক্যাপ’ পাওয়ার কোনও মানেই হয় না, যদি না আমি ইংল্যান্ডকে কিছু দিতে পারি! এ বার বিশ্বকাপে আমাকে গোটাকয়েক ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হলেও কিছু যাবে-আসবে না, যদি তার বদলে ইংল্যান্ড ব্রাজিলে চমকপ্রদ পারফর্ম করে দেখাতে পারে।
প্র: আপনাকে বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া মনে হচ্ছে?
রুনি: ঠিকই মনে হচ্ছে। ইংল্যান্ডের জার্সিতে একটা বড় ট্রফি জিততে আমি সত্যিই মরিয়া। কোনও মানেই হয় না, দেশের জার্সিতে গাদাগুচ্ছের ম্যাচ খেললাম বছরের পর বছর ধরে, অথচ কোনও ট্রফি জিতলাম না! দেশকে চূড়ান্ত সাফল্য এনে দিতে আমি এ বার বিশ্বকাপে একদম তৈরি।
প্র: আপনি একা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেই তো হবে না। ফুটবল দলগত খেলা। ইংল্যান্ডের বাকি দশ জন প্লেয়ার কি বিশ্বকাপ জেতার মতো দক্ষ?
রুনি: আমাদের ড্যানিয়েল স্টারিজ, রহিম স্টার্লিং, অ্যাডাম লাল্লানা-র মতো ফুটবলাররা ব্রাজিলে নজর কাড়তেই পারে। আর এক জনের কথা আলাদা করে বলব। রস বার্কলে। এভার্টনে এ মরসুমে অসাধারণ ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করেছে। সুয়ারেজ প্রিমিয়ার লিগে সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হতে পারে। কিন্তু বার্কলে হলেও হয়তো কারও বলার কিছু থাকত না।
প্র: উরুগুয়েতে সুয়ারেজ। আর্জেন্তিনায় মেসি। পর্তুগালে রোনাল্ডো। ইংল্যান্ডে রুনি। পরের মাসে ব্রাজিলে নিজেদের দেশের হয়ে চার জনের কার কতটা জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা?
রুনি: এ বারের বিশ্বকাপে আমার মানসিকতা সম্পর্কে আগেই বলেছি। শুধুই নিজের ঝুলিতে ইংল্যান্ড ক্যাপ-এর সংখ্যা বাড়াতে চাই না। দেশকে ট্রফি দিতে চাই। অতএব নিজের সেরাটা দিতেই মরিয়া থাকব। ক্রিশ্চিয়ানো (রোনাল্ডো) আর লিও মেসি নিজের-নিজের দলের মেরুদণ্ড। দু’জনেরই ম্যাচের পর ম্যাচে গোলের পর গোল করার অসাধারণ ক্ষমতা আছে। ক্লাবের মতোই দেশের জার্সিতেও সমান। কিন্তু দু’জনেরই জাতীয় দলে নিজেদের পাশে অত ভাল স্ট্যান্ডার্ডের ফুটবলার নেই। যেটা উরুগুয়ে দলে সুয়ারেজের পাশে কিছুটা বেশি আছে বলে মনে করি।
তবে আমার মতে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল, মাঠে মেসি-রোনাল্ডোর চেয়েও অপ্রত্যাশিত কিছু করে ফেলা, অভাবনীয় কিছু ঘটিয়ে ফেলার ক্ষমতা সুয়ারেজের খেলায় বেশি। সে কারণে মেসি-রোনাল্ডোর চেয়েও সুয়ারেজকে আটকানো ডিফেন্ডারদের কাছে কঠিন কাজ। মেসি-রোনাল্ডোর শক্তি কী, ফুটবল বিশ্ব সেটা জেনে গিয়েছে। আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না, সুয়ারেজের খেলার ব্যাপারে প্রতিপক্ষদের এখনও কিছু অজানা ব্যাপার আছে। ও যেন বিপক্ষ ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়েও বল নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে! সুয়ারেজ ব্রাজিলে সবচেয়ে নজরকাড়া প্লেয়ার হতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy