প্রতীকী ছবি।
প্রত্যন্ত গ্রামেও বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য দুই স্তরেই জোর তৎপরতা চলেছে কয়েক বছর ধরে। কিন্তু তাতে বাধা আসছে কোথাও কোথাও। এমনই একটি ঘটনায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত।
এক গৃহস্থের বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজে বাধা দিচ্ছিলেন তাঁদের এলাকার কয়েক জন। উস্তির নরহরিপুরের ওই ঘটনায় সেখানকার ছয় বাসিন্দাকে বৃহস্পতিবার দিনভর পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই নির্দেশ পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ছ’জনকে নিজেদের হেফাজতে নেন উস্তি থানার ওসি। ওই নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি মান্থা জানিয়ে দেন, দ্বিতীয় বার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীদের বাধা দেওয়া হলে তিনি ওই ছ’জনকে জেলে পুরে রাখার নির্দেশ দিতে দ্বিধা করবেন না।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আইনজীবী সুজিতশঙ্কর কোলে শুক্রবার জানান, নরহরিপুরের বাসিন্দা তপনকুমার বেনিয়া নিজের বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আমজনতার ব্যবহার্য জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি পুঁততে দিতে রাজি হননি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। উপায় না-দেখে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তপনবাবু। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি প্রাক্তন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া বণ্টন সংস্থার আমতলার স্টেশন ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন, তপনবাবুর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বণ্টন সংস্থার কর্মীরা উস্তি থানার সাহায্য চান। পীযূষকান্তি মণ্ডল নামে এক সাব-ইনস্পেক্টর বিদ্যুৎকর্মীদের নিয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তপনবাবুর পাড়ায় যান। পুলিশ জানায়, সেই সময় তাপস বেনিয়া, বিজয় বেনিয়া, ধনঞ্জয় বেনিয়া, আশিস বেনিয়া, অজিত বেনিয়া ও পান্নালাল বেনিয়ার নেতৃত্বে এক দল লোক বণ্টন সংস্থার কর্মীদের উপরে চড়াও হয়। তারা মারমুখী হয়ে কর্মীদের ঘিরে রাখে। তাদের বক্তব্য, সাধারণের ব্যবহার্য জমিতে বিদ্যুতের খুঁটি পুঁততে দেওয়া হবে না।
পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করে এসআই পীযূষবাবু বিদ্যুৎকর্মীদের নরহরিপুর থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যান এবং সবিস্তার তথ্য জানিয়ে জেনারেল ডায়েরি করিয়ে রাখেন। এর পরে তপনবাবু বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন হাইকোর্টে।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি অবমাননার মামলাটি ওঠে বিচারপতি মান্থার আদালতে। বিচারপতির নির্দেশ পালন করতে গিয়ে বণ্টন সংস্থার কর্মীরা কী ভাবে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন, আদালতে তা জানান বণ্টন সংস্থার কৌঁসুলি সুজিতশঙ্করবাবু। বিচারপতি তা শুনে ওই ছ’জনকে আদালত অবমাননার মামলায় যুক্ত করার জন্য তপনবাবুকে নির্দেশ দেন এবং মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন ২৮ মার্চ। ওই দিন অভিযুক্ত ছ’জন বা তাঁদের কোনও কৌঁসুলি আদালতে হাজির না-হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে উস্তি থানার ওসি-কে নির্দেশ দেন, ১১ এপ্রিল সকলকে তাঁর আদালতে হাজির করাতে হবে।
ওই দিন বিচারপতি মান্থার আদালতে ছ’জনকে হাজির করানো হলে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy