মনোজ উপাধ্যায়
ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায়ের হত্যাকাণ্ডে মূল সাত অভিযুক্ত বারাণসীতে ধরা পড়েছে বলে সোমবার রাতে জানায় হুগলি পুলিশ। এই নিয়ে ওই ঘটনায় মোট আট জন গ্রেফতার হল। ঘটনাচক্রে এ দিনই পুরপ্রধান খুনের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডি-কে।
চন্দননগর কমিশনারেটের নতুন পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার জানান, বারাণসীর বেনিয়াবাগের একটি লজে লুকিয়ে ছিল মূল সাত অভিযুক্ত। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাহায্যে মোবাইল ট্র্যাক করে হুগলি পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম রাজু চৌধুরী, রতন চৌধুরী, কৃষ্ণ চৌধুরী, রাজেশ চৌধুরী, আকাশ চৌধুরী, সন্তোষ প্রসাদ ও দেবু পাকরে। অন্যতম অভিযুক্ত, পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর রাজু সাউ এখনও পলাতক। আজ, মঙ্গলবার ট্রানজিট রিম্যান্ডের জন্য ধৃতদের বারাণসীর আদালতে তোলা হবে। আদালতের অনুমতি পেলে কাল, বুধবারেই তাদের রাজ্যে আনা হবে।
আরও পড়ুন: সরব বিরোধীরা, উঠছে শিল্প-প্রশ্নও
নবান্ন সূত্রের খবর, খুনের তদন্তের দায়িত্ব ভবানী ভবনের গোয়েন্দাদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত শনিবারেই নেন স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত ওই মামলার কেস ডায়েরি সিআইডি-র হাতে পৌঁছয়নি। আজ, মঙ্গলবার সেটি ভবানী ভবনে পৌঁছতে পারে। এই মামলার তদন্তে বাছাই
করা অফিসার নিয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হচ্ছে।
২১ নভেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারান মনোজবাবু। পুলিশি সূত্রের খবর, চিন্টু দুবে নামে এক সঙ্গীর মোটরবাইকে চেপে ফিরছিলেন তিনি। পথে কয়েক জন তাঁকে ডাকে। তিনি বাইক থামাতেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে ঘিরে ধরে। চিন্টুর দাবি, বিপদ বুঝে তিনি লোকজন ডাকতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে আছেন পুর চেয়ারম্যান। তাঁর শরীরে মোট পাঁচটি গুলি বিঁধেছিল।
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভদ্রেশ্বরে গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু এ দিন বিকেল পর্যন্ত ধরা পড়েছিল মাত্র এক জন, মুন্না রাই। মনোজবাবুর পরিবারের তরফে নির্দল কাউন্সিলর-সহ কয়েক জনের নামে এফআইআর করা হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, খুনের পরে স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের ক্ষোভ সামলাতে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডেকে বদলি করে অজয় কুমারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ দিন সাত জন গ্রেফতার হওয়ায় হুগলি তথা চন্দননগর পুলিশের কিছুটা মুখরক্ষা হল বলে পুলিশ মহলের দাবি।
ভবানী ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তদন্তের কাজ এগিয়ে রাখছেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা জেনেছেন, মনোজবাবুকে নিশানা করা হয়েছিল পুরনো শত্রুতার জেরে। গোয়েন্দাদের ধারণা, খুনের সঙ্গে মনোজবাবুর পরিচিত লোকজনই জড়িত। কারণ, পরিচিত না-হলে মোটরবাইক থামিয়ে পুরপ্রধান নেমে যেতেন না। চিন্টুর কথাবার্তায় কিছু অসঙ্গতি লক্ষ করা যাচ্ছে। তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy