পাশাপাশি: আলোচনা সেরে বেরিয়ে আসছেন অর্পিতা, পাশে সোনা পাল। ছবি: অমিত মোহান্ত
গঙ্গারামপুর পুরসভায় চেয়ারম্যান এবং বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের ডাকা অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় সোমবার ওই নোটিস খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছেন, ওই পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাইস চেয়ারম্যান যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন, তা বৈধ। একই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত মতো আগামী ৫ অগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় অনাস্থা বৈঠক হবে।
গঙ্গারামপুর পুরসভা সূত্রের খবর, রাকেশ পণ্ডিত, অতনু রায় ও অমলেন্দু সরকার নামে তৃণমূলের তিন কাউন্সিলর ১৯ জুলাই চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানান, তাঁরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছেন। ২৩ জুলাই বেলা ১১টায় অনাস্থা বৈঠক হবে। ওই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে মামলা দায়ের করেন ভাইস চেয়ারম্যান তুলসীপ্রসাদ চৌধুরী। মামলায় যুক্ত করা হয় চেয়ারম্যানকেও। মামলার শুনানিতে ভাইস চেয়ারম্যানের আইনজীবী অশোক চক্রবর্তী জানান, তাঁর মক্কেল অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চেয়ে চেয়ারম্যানকে ১৬ জুলাই প্রথমে চিঠি দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে ৫ অগস্ট অনাস্থা বৈঠক ডাকা হয়েছে। তাই ১৯ জুলাইয়ের অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত নোটিসের বৈধতা নেই। পুর আইন অনুযায়ী যিনি বা যাঁরা প্রথমে অনাস্থার নোটিস দেবেন, তাঁদের নোটিসই বৈধতা পাবে।
গঙ্গারামপুর পুরসভায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পুরপ্রধান প্রশান্তকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রশান্ত এর পরে পুর আইন অনুসারে প্রথমে অনাস্থা প্রস্তাবকারী অমল সরকারকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেন। তার পরে অনাস্থায় স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন প্রশান্ত।
কিন্তু হাইকোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েন তিনি। এর পরে আস্থা ভোটের এক দিন আগে তুলসীপ্রসাদকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আনেন প্রশান্ত। তিনি বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্তের অনুগামী বলেই পরিচিত। তুলসীপ্রসাদ ৫ অগস্ট আস্থা ভোটের দিন ঠিক প্রশান্তকে চিঠি পাঠান।
এ দিন রায়ের কথা জানার পরে তুলসীপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমি আস্থা ভোটের যে দিন ঠিক করেছিলাম, হাইকোর্ট তাঁকে মান্যতা দিয়েছে। ৫ তারিখ আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেখিয়ে দেব।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায়ের কপি পেলে এজি-র সঙ্গে কথা বলে দেখব। যদি আইনগত ভাবে কোনও উপায় থাকে, তা হলে সেই ভাবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করব। না হলে, ৫ অগস্টেই আমরা আস্থা ভোট করব।’’
বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে হালিশহর এবং বনগাঁ পুরসভা নিয়েও মামলা চলছে। হালিশহরে দলের একাধিক কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তৃণমূলের পুরপ্রধান নিজেই আস্থা ভোট ডাকেন। তার বিরুদ্ধে বিজেপির কাউন্সিলরদের একাংশ আদালতে যান। তাদের অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপে ডাকা আস্থা ভোট বৈধ নয়। তার উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন বিচারপতি। আজ, মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি। বনগাঁ পুরসভার আস্থা ভোটেও তৃণমূল-বিজেপি-র দাবি, তারাই জিতেছে। এই নিয়েও মঙ্গলবার শুনানি রয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy