অন্ডাল বিমানবন্দর
কলকাতা বিমানবন্দরের কাছেই এ বার দ্বিতীয় বিমানবন্দর নিয়েদ্বিতীয় বিমানবন্দর নিয়ে
কলকাতায় যে হারে বিমানের সংখ্যা বাড়ছে তাতে স্পষ্ট, আগামী দিনে এখনকার নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে না। এমনকী, কলকাতার রানওয়েতেও এত বিমান ওঠা-নামা করা নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বিকল্প বিমানবন্দরের এই প্রস্তাব।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাছে প্রস্তাবের খসড়া পাঠান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নবান্ন সূত্রে খবর, কলকাতা শহর থেকে সড়কপথে ১ ঘণ্টার দূরত্বে বিমানবন্দর তৈরির মতো বিশাল জমি পাওয়া মুশকিল। সে ক্ষেত্রে দুর্গাপুরের অন্ডাল বিমানবন্দরকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও প্রাথমিক ভাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তা পছন্দ নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ঘোষিত ভাবেই জমি অধিগ্রহণের বিরোধী। তাই কলকাতার এত কাছে কারও থেকে জোর করে জমি না নিয়ে, কাউকে গৃহহীন না করে এতটা জমি পাওয়া নিয়ে চিন্তা থাকছেই রাজ্য প্রশাসনের। লন্ডনের হিথরো থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে গ্যাটউইক বিমানবন্দরকে হিথরোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। একই মডেলে দিল্লির কাছে গ্রেটার নয়ডায় ও মুম্বইয়ের অদূরে নবি মুম্বইয়ে দুই বিকল্প বিমানবন্দর তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
দমদমে এখন যে বিমানবন্দর রয়েছে, সেটির সূচনা ১৯২৪ সালে কেএলএম-এর যাত্রীবিমান দিয়ে। তার পরে ৯৩ বছর ধরে বহু পরিমার্জন, পরিবর্ধন হয়েছে এই বিমানবন্দরের। বছরে ২ কোটি যাত্রী ধরতে পারে, ২০১৩-য় এমন নতুন টার্মিনাল বানানোর পরেও সমস্যা রয়ে গিয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এ মাসের শুরুতেই বিকল্প বিমানবন্দরের জমির জন্য কলকাতায় এসে মুখ্যসচিব মলয় দে-র সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্রের।
বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘অন্তত ৭০০ থেকে ১৫০০ একর জমি দরকার। বিকল্প হিসেবে অন্ডালের প্রসঙ্গ উঠেছে। কিন্তু, বড় শহরের প্রধান বিমানবন্দরের বিকল্প বিমানবন্দরটি সেখান থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে করা মুশকিল।’’ গুরুপ্রসাদ জানান, প্রধান বিমানবন্দরে নেমে যাত্রীদের দ্বিতীয় বিমানবন্দরে গিয়ে অন্য শহরের উড়ান ধরতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্ডাল অনেক দূর হয়ে যাবে।
২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে কলকাতায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার বিমান ওঠা-নামা করেছে। এত বিমান দাঁড় করানোর জন্য পার্কিং বে নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। নতুন ১০টি পার্কিং বে তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ‘পিক আওয়ার’-এ রানওয়ে থেকে ঘণ্টায় ৩০টির জায়গায় ৩৫টি বিমান যাতে ওঠা-নামা করতে পারে তার চেষ্টাও হচ্ছে। কিন্তু, সেটাও পর্যাপ্ত নয়।
গুরুপ্রসাদের কথায়, ‘‘বিমানবন্দরের প্রধান রানওয়ের সমান্তরাল ট্যাক্সিওয়ে করা গেলে তাড়াতাড়ি রানওয়ে খালি করে দিতে পারত বিমান। কিন্তু, দ্বিতীয় রানওয়ের উত্তরে একটি ধর্মস্থান থাকায় সেই সমান্তরাল ট্যাক্সিওয়ে করা যায়নি।
কলকাতায় দু’টি সমান্তরাল রানওয়ে রয়েছে। সেই দু’টি একসঙ্গে কাজ করলেও কি আরও বেশি বিমান ওঠা-নামা করতে পারবে না?
সূত্রের খবর, কলকাতার প্রধান ও দ্বিতীয় রানওয়ের মাঝখানে ব্যবধান ২১৩ মিটারের। কিন্তু দুই সমান্তরাল রানওয়ে থেকে একসঙ্গে বিমান ওঠা-নামা করতে গেলে দুই রানওয়ের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব থাকা উচিত ৭৬০ মিটার। সেই কারণে কলকাতায় সমান্তরাল রানওয়ে থেকেও লাভ হয়নি। চেয়ারম্যানের বক্তব্য, এয়ার সাইডে (বিমানবন্দরের যে দিকটায় বিমান নামা-ওঠা করে এবং বিমান দাঁড়ায়) পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তার সংলগ্ন এমন কোনও জমিও নেই যা নিয়ে এয়ার সাইড বাড়ানো যাবে। ফলে, নতুন জায়গা লাগবেই। এবং সেটা কলকাতা থেকে ৪০-৪৫ মিনিটের মধ্যে হওয়াটাও জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy