প্রস্তুতি: অমিত শাহের কাট আউট ঝাড়গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বুধবার সভা করতে ঝাড়গ্রামে আসছেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। প্রস্তুতির মাঝেই তাঁর সভাস্থল ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
বিজেপি সূত্রের খবর, গড় শালবনির রাবণপোড়া ময়দানে হবে অমিতের সভা। যা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। সভাস্থল এত দূরে কেন? বিজেপির অভিযোগ, শহরের হেলিপ্যাডে অমিতের কপ্টার অবতরণের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘আমরা সভার জন্য ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়াম চেয়েছিলাম। ওখানে মুখ্যমন্ত্রী সভা করেন। কিন্তু আমাদের স্টেডিয়াম দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে, এখানে এখন সভা করা নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। ঝাড়গ্রাম হেলিপ্যাড ময়দানে কপ্টার নামার অনুমতিও দেওয়া হয়নি। প্রশাসন সব রকম ভাবে অসহযোগিতা করছে।’’ কী বলছে প্রশাসন? জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘গড়শালবনি মাঠে সভা এবং শিরষির হেলিপ্যাডের জন্য দুটো আবেদন পেয়েছি। সেই মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
বিজেপি-র দাবি, সভায় অমিতের পাশাপাশি থাকবেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, মুকুল রায়, সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এই মর্মে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে বিজেপি।
সোমবার লোধাশুলি রাজ্যসড়কের ধারে গড়শালবনি রাবণ পোড়া ময়দানে গিয়ে দেখা গেল, অমিতের সভার প্রস্তুতি চলছে। বিজেপি সূত্রের খবর, সভাস্থল থেকে দু’কিলোমিটার দূরে শিরষির একটি ক্লাবের মাঠে সভাপতির কপ্টার নামবে। অমিতের সভামঞ্চ তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে ঝাড়গ্রামের একটি ডেকরেটার্স সংস্থাকে। মাঠের একেবারে পূর্ব প্রান্তে পশ্চিমমুখো মূল মঞ্চটি হচ্ছে ৩২ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট চওড়া। সেখানে অমিত-সহ ১৬ জন প্রথম সারির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতারা বসবেন। এ ছাড়া পাশে তৈরি হচ্ছে একই মাপের দ্বিতীয় একটি মঞ্চ, সেখানে থাকবে গোটা তিরিশ চেয়ার। ওই মঞ্চে বসবেন রাজ্য ও জেলার শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা। এ ছাড়া মঞ্চের ডি জোনের পরে পাতা হচ্ছে হাজার চারেক চেয়ার, সেখানে বিজেপি-র জেলাস্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা বসবেন। বাদবাকি মাটিতে বসার ব্যবস্থা থাকছে। মূল মঞ্চের দু’দিকে এবং সভাস্থলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে বেশ কিছু জায়ান্ট স্ক্রিন। এমনকি, ১০ কিমি দূরে ঝাড়গ্রাম শহরের জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে অমিতের সভার অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।
গড়শালবনির মাঠটি খুব বড় নয়। মাঠের মাঝে রয়েছে কয়েকটি গাছ। রাজ্য সড়কের ধারে এমন সভায় সব লোক ধরবে কি-না তা নিয়ে গেরুয়াশিবিরের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। সুখময় বলছেন, ‘‘ওই মাঠে তিরিশ হাজারের বেশি লোক ধরে না। তবে সভাস্থল কানায়-কানায় ভরে যাবে।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা কোর কমিটির সহ-সভাপতি রেখা সরেন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নেই আস্থা রেখেছেন জঙ্গলমহলবাসী। বিজেপি নতুন করে এলাকায় অশান্তি বাধাতে চাইছে। ওদের যত বড় নেতাই আসুন না কেন, মানুষের সমর্থন তাঁরা পাবেন না। তাছাড়া ওই মাঠে হাজার দু’য়েকের বেশি লোক ধরে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy