ঠাঁই: জনসভা করতে আসছেন অমিত শাহ। সন্ধ্যামাঠপাড়ায় বাঁধা হচ্ছে মঞ্চ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেত্রী যে ময়দান থেকে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন, কৃষ্ণনগরে সেই মাঠেই অমিত শাহকে এনে সভা করাতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু অনুমোদন চেয়েও বিকাশ ভবন থেকে সাড়াশব্দ না পাওয়ায় শহরের বাইরে সরতে হচ্ছে তাদের।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ রাজ্যে একাধিক সভা করবেন বলে আগে স্থির থাকলেও সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিনি ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের আক্ষেপ, “আগামী ২৪ জানুয়ারি অমিত শাহের জনসভার জন্য আমরা কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠ চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আবেদনপত্রটাই গ্রহণ করা হয়নি।”
বাধ্য হয়ে তাঁরা সভার আয়োজন করছেন কৃষ্ণনগর শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সন্ধ্যামাঠপাড়ায়। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের চাপেই শহরের কেউ তাদের মাঠ দিতে রাজি হয়নি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “কে কোথায় সভা করতে এল, তা নিয়ে আমরা ভাবিত নই। বাধা দিতে যাব কেন?’’ আর, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শোভন নিয়োগী বলেন, “আমাদের কাছে মাঠে জনসভা করার আবেদন নিয়ে কেউ আসেইনি।”
বিজেপি সূত্রের খবর, কলেজের মাঠ না পেয়ে কৃষ্ণনগর শহরের আর একটি বড় মাঠ কারবালার মাঠ হাতে পাওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা। মাঠটি যে ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি, তাদের কাছে মৌখিক ভাবে অনুমতিও চাওয়া হয়। কিন্তু তারা মাঠ দিতে রাজি হয়নি। কারবালা ওয়াকফ বোর্ডের সম্পাদক নাজিম আহমেদ বলেন, ‘‘জনসভা করায় আগে মাঠ নষ্ট হয়েছে। আমরা ঠিক করেছি, মাঠ সারিয়ে চারপাশে পাঁচিল দিয়ে তার পরে কাউকে সভা করতে দেব।’’
শক্তিনগরে শক্তিমন্দির মাঠ পাওয়ার চেষ্টাও করেছিল বিজেপি। কিন্তু প্রস্তাব শুনেই তারা নাকচ করে দেয়। ওই মাঠের অন্যতম কর্মকর্তা কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান, তৃণমূল নেতা অসীম সাহা। তিনি শুধু বলেন, ‘‘বিজেপিকে মাঠ দেওয়া যাবে না। অসুবিধা আছে।’’
বিজেপি যে সন্ধ্যামাঠপাড়ায় সভা করতে চলছে সেটি পোড়াগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ছে। এ বারই প্রথম বিজেপি এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে। মাঠটি যুব নাট্যসঙ্ঘের। আগে এক বার তারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা অনুদানও পেয়েছে। তার পরেও অমিত শাহের সভার জন্য বিজেপিকে মাঠ দিলেন? ক্লাবের তরফে বিপুল প্রামাণিক বলেন, “আমাদের ক্লাবের সিদ্ধান্ত হল, যে-ই মাঠ চাইবে তাকেই মাঠ দেওয়া হবে। ক্লাবের উন্নয়নের জন্য তাদের ছ’হাজার টাকা দিতে হবে। তৃণমূল যদি মাঠ চায়, তাদেরও দেওয়া হবে।”
মহাদেব বলেন, “কৃষ্ণনগর শহরে কেউ মাঠ দিতে রাজি না হওয়ায় আমরা বাইরে সভা করতে বাধ্য হচ্ছি। মাঠ কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুমতি দিয়েছেন। তবে জেলাশাসককে ফোন করে পাইনি। সোমবার আমরা অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy