Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
বাংলা বন্‌ধ

পুরো ব্যর্থ বন্‌ধ, দাবি মমতার, তৃণমূলই সফল করে দিয়েছে, কটাক্ষ দিলীপের

বিজেপির ডাকা বন্‌ধে যাতে সাড়া না পড়ে, তা যে কোনও মূল্যে সুনিশ্চিত করার নির্দেশ যে ইতালি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিয়েছিলেন এবং তিনি যে প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতির খবর রাখছিলেন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের কথায়।

মমতার দাবি বন্‌ধ ব্যর্থ, পাল্টা কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের। —ফাইল চিত্র

মমতার দাবি বন্‌ধ ব্যর্থ, পাল্টা কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২২:২৭
Share: Save:

সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বিজেপির ডাকা বাংলা বন্‌ধ। ইতালির মিলান থেকে এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘বিজেপির দিন শেষ’’ বলেও মন্তব্য করলেন তিনি। আর বুধবার বিকেলে কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘পুলিশ-তৃণমূল এক হয়ে বন্‌ধ ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাজ্যের সাধারণ মানুষই বন্‌ধ সফল করে দিয়েছেন।’’

বিজেপির ডাকা বন্‌ধে যাতে সাড়া না পড়ে, তা যে কোনও মূল্যে সুনিশ্চিত করার নির্দেশ যে ইতালি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিয়েছিলেন এবং তিনি যে প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতির খবর রাখছিলেন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের কথায়। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘বন্‌ধের প্রভাব দেখিনি। তবে সুশাসন কাকে বলে, ইতালির মিলানে বসে যে পশ্চিমবঙ্গ চালানো যায়, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিলেন।’’

বুধবার কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যকে সচল রাখতে পুলিশ-প্রশাসনের প্রস্তুতি ছিল দেখার মতো। কলকাতার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ-র‌্যাফ-কমব্যাট ফোর্সের উপস্থিতির বহরটা এ দিন যে রকম ছিল, তেমনটা গত বেশ কয়েকটা বন্‌ধে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: অবরোধ-অশান্তি-আগুন, বন্‌ধে ঈষৎ থমকাল বাংলা

শুধু পুলিশের ভরসায় অবশ্য ছিল না, রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও এ দিন পথে ছিলেন। কোথাও মিছিল করেছেন তাঁরা, কোথাও দোকানপাট খুলিয়েছেন, কোথাও বন্‌ধ সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি-মারামারিতেও জড়িয়েছেন। শ্যামবাজারে ধস্তাধস্তির ছবি দেখা গিয়েছে। বারাসতে মহিলা বিজেপি কর্মীকে রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছেন তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা— এমন ছবিও ধরা পড়েছে।

দেখুন ভিডিয়ো

দিলীপ ঘোষ বিজেপি কর্মীদের উপরে রাজ্য জুড়ে আক্রমণের অভিযোগ তুলে এ দিন সরব হন। দুহাজারের বেশি বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর কথায়, বিজেপি কোথাও জোর করে বন্‌ধ করার চেষ্টা করেনি,নেতৃত্বের তরফ থেকে কর্মীদের তেমন কোনও নির্দেশও দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয়েছে বলে দিলীপবাবুর অভিযোগ। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাড়া দিয়ে বন্‌ধকে সফল করেছেন বলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দাবি করেন। সে প্রসঙ্গেই তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে দিলীপের মন্তব্য— বিজেপির ডাকা এই বন্‌ধের ‘সাফল্যের’ তৃণমূলেরও ভূমিকা রয়েছে। বন্‌ধ ব্যর্থ করার ডাক দিয়ে যে তুমুল প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল শাসক দল ও সরকার, তাতেই রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছিলেন বন্‌ধে কেমন সাড়া পড়তে চলেছে— ব্যাখ্যা দিলীপ ঘোষের।

বিজেপি সমর্থকদের রাস্তা অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘বন্‌ধ ব্যর্থ। বন্ধ্যা বন্‌ধ ব্যর্থ করার জন্য বাংলার মানুষকে অভিনন্দন। বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে লোক ঢুকিয়ে বিজেপি ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সার্বিক ভাবে বন্‌ধ ব্যর্থ।’’ তবে রাজ্য সরকার যে চুপচাপ বসে থাকবে না, সে ইঙ্গিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই বিধানসভায় বিল পাশ করেছি, যদি কেউ সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে, নষ্ট করে, তা হলে তাকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পুলিশ-প্রশাসনকে বলছি কঠোর ভাবে সেই আইন প্রণয়ন করতে। সরকারি জিনিস ভাঙচুর করে কেউ যেন পার না পায়।’’

রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা-নেত্রীদের। বন্‌ধের দিনে মুকুল রায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়দের ভূমিকা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাল শিক্ষকের কাছে থাকলেই তো আর ভাল ছাত্র তৈরি হয় না। এরা সব অগা তৈরি হয়েছে। যা বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি যতটা বেড়েছিল, এরা গিয়ে সেটাকে নামাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE