ফাইল চিত্র।
তারাপীঠে পুজো দিতে গিয়ে বিহারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুরেশ শর্মা ও তাঁর সঙ্গীদের উপরে হামলা ও পাল্টা-হামলা নিয়ে সরগরম বিহার রাজনীতি।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের অভিযোগ, ভিন রাজ্যের হোটেলে গিয়ে গোলমাল করে বিহারের ছবিকে কলঙ্কিত করেছেন মন্ত্রী। হোটেলে মন্ত্রী গুণ্ডামি করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। অন্য দিকে, নীতীশ মন্ত্রিসভার ওই সহকর্মীর পাশেই দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি-জেডিইউ জোট। তাঁদের অভিযোগ, আগেভাগে জানানো সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিহারের মন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি। জেডিইউ সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রী বিহারে এলে তাঁকে সরকারি ‘অতিথি’-র যাবতীয় মর্যাদা দেওয়া হয়। সেটাই দস্তুর। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’’
বিরোধী আরজেডি মুখপাত্রের দাবি, মন্ত্রী তারাপীঠে মদ্যপান করতেই গিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তেজস্বীর বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো উচিত ছিল।’’ বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ‘‘মন্ত্রী নতুন বছরের শুরুতে সস্ত্রীক তারাপীঠে পুজো দিতেই গিয়েছিলেন। কোনও অভব্যতা করতে নয়।’’ হোটেল কর্তৃপক্ষই তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে গোলমাল পাকাতে প্ররোচনা দেয় বলে তাঁদের অভিযোগ। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, নীতীশ মন্ত্রিসভার সব থেকে ‘ধনী’ মন্ত্রী হলেন সুরেশ শর্মা। সামান্য টাকার জন্য তিনি গোলমাল করবেন এটা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজে সুরেশ শর্মার সঙ্গে কথা বলার পর মুখ্যসচিব ও ডিজিকে বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন। ডিজির কাছ থেকে একটি রিপোর্টও তিনি চেয়েছেন।
এ দিকে, তারাপীঠের ঘটনা নিয়ে সুরেশবাবুর তরফে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি, মন্ত্রী ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন সংশ্লিষ্ট হোটেল কর্তৃপক্ষও। উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে ঘটনার সূত্রপাত তারাপীঠের একটি হোটেলে। অনলাইনে ওই হোটেলে চারটি ঘর বুক করা হয়। সোমবার বিকেল চারটে থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বুকিংয়ের সময়সীমা ছিল। হোটেলে এসে ঘর দেখে তাঁদের পছন্দ হয়নি। বুকিং-এর টাকা ফেরত চান তাঁরা। তা দিতে অস্বীকার করেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। এই নিয়েই গোলমাল। হোটেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, মন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীরা হোটেল কর্মীদের মারধর করে। কম্পিউটার ভাঙচুর করে।
আজ সকালে পুজো দেওয়ার পর বিকেলে তারাপীঠ ছাড়ার আগে সুরেশবাবু সাংবাদিক বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, অভিযোগ জানানোর দেড়, দু’ঘণ্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখার পরেও পুলিশ গড়িমসি করে। মন্ত্রীর সচিব জানান, আসার আগে প্রোটোকল মেনেই রাজ্য সরকারকে মন্ত্রীর তারাপীঠে যাওয়ার কথা জানানো হয়। মুজফ্ফরপুরের বিজেপি নেতা সুরেশ শর্মা রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথের সিংহের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তিনি বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানকার কোনও মন্ত্রী যখন বিহার যান, তখন আমরা আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি করি না। অথচ এখানে তেমনটা হল না। এটা দুঃখের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy