Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মমতার বৈঠকে ‘বিরোধী’ বিশ্বনাথ

কাগজে কলমে তিনি বিরোধী দলের বিধায়ক। সেই বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকেই সোমবার দেখা গেল দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে। দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে আছেন বলে জল্পনা রয়েছেই।

মঞ্চের সামনে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

মঞ্চের সামনে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৫
Share: Save:

কাগজে কলমে তিনি বিরোধী দলের বিধায়ক। সেই বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকেই সোমবার দেখা গেল দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে। দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে আছেন বলে জল্পনা রয়েছেই। তাঁর স্ত্রী দুর্গাপুর পুরসভায় তৃণমূলের মেয়র পারিষদও। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে বিশ্বনাথবাবুর উপস্থিতি জল্পনায় আরও ইন্ধন জুগিয়েছে।

এ দিন মঞ্চের নীচে প্রেক্ষাগৃহের একেবারে সামনের সারিতে বসেছিলেন বিশ্বনাথবাবু। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কুলটি, বারাবনির বিধায়কদের নাম ধরে ধরে জানতে চান, তাঁদের এলাকায় কী কী দরকার বা তাঁদের কিছু বলার আছে কি না। তৃণমূলের বিধায়কদের নজর ছিল, তাঁকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা নিয়ে। ওই বিধায়কদের কারও কারও মতে, প্রথম দিকে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বনাথবাবুকে কার্যত এড়িয়েই যান। তাঁর নামও নেননি। তবে, সভার শেষ দিকে এসে মমতা যখন জানতে চান, ‘আর কারওর কিছু বলার আছে?’, সুযোগ পেয়ে দুর্গাপুর শহরের দু’টি সমস্যার কথা জানিয়ে প্রতিকার চান বিশ্বনাথবাবু।

গত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বামেদের সমর্থনে বিধায়ক হন বিশ্বনাথ। দুর্গাপুরে ভোটের প্রচারে এসে তাঁকে তৃণমূল নেত্রী মমতা তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়েছিলেন। দুর্গাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতান্তরের জেরেই দল ছেড়েছিলেন তিনি। বিধানসভা ভোটের পরে তিনি তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সেভাবে তা গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু, পুর-নির্বাচনে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সেই বিশ্বনাথকেই ‘আপন’ করে নেয় তৃণমূল। দলের অনেকেই অবশ্য তা মেনে নিতে পারেননি। পুর-নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরেই বিশ্বনাথের গুরুত্ব কমতে থাকে দলে, এমনই দাবি দলের একাংশের। তলে তলে তিনি বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলেও দাবি তৃণমূলের একাংশের।

যদিও বিশ্বনাথবাবু এমন অভিযোগ মানতে চাননি। সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের সঙ্গে তাঁকে এক মঞ্চে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বনাথবাবু যে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন, তা নিয়ে কোনও চমক নেই বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের। এ দিন বিশ্বনাথবাবুর তোলা দুর্গাপুরের তামলা নালার সংস্কারের প্রস্তাব নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি কিছু বলেননি। যা বলার বলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব। বিশ্বনাথবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বিধায়ক হিসাবে প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির থেকে দুর্গাপুরের সমস্যা তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি। সচিব দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাসও দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE