Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে, উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় বিজেপি

সংগঠন তৈরি হচ্ছে না। সদস্য সংখ্যাও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছচ্ছে না। ফলে, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে পশ্চিমবঙ্গে দলের পক্ষে যে হাওয়া তৈরি হয়েছিল, তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ রাজ্যে দলের সম্ভাবনা সম্পর্কে এটাই এখন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের মূল্যায়ন। আসন্ন পুরভোট ও আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্য নেতৃত্বকে দিল্লিতে ডেকে যথেষ্ট উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সংগঠন গড়ার লক্ষ্যে তৃণমূল স্তরে আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শও দিয়েছেন।

রোশনী মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০৩:১৬
Share: Save:

সংগঠন তৈরি হচ্ছে না। সদস্য সংখ্যাও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছচ্ছে না। ফলে, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে পশ্চিমবঙ্গে দলের পক্ষে যে হাওয়া তৈরি হয়েছিল, তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এ রাজ্যে দলের সম্ভাবনা সম্পর্কে এটাই এখন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের মূল্যায়ন। আসন্ন পুরভোট ও আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্য নেতৃত্বকে দিল্লিতে ডেকে যথেষ্ট উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সংগঠন গড়ার লক্ষ্যে তৃণমূল স্তরে আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শও দিয়েছেন।

বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং আরএসএস নেতা রামলাল ও শিবপ্রকাশ গত বুধবার দিল্লিতে দলের ১৪ জন রাজ্য নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের বিষয় ছিল ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের জন্য রোড ম্যাপ। দলীয় সূত্রের খবর, এ রাজ্যে সংগঠন বিস্তার আশানুরূপ না হওয়ায় ওই বৈঠকে অমিত অসন্তোষ প্রকাশ করেন। রাজ্য নেতারা অমিতকে জানান, জমি তৈরি থাকলেও তৃণমূলের সন্ত্রাস এবং যোগ্য কর্মীর অভাবে রাজ্যে সংগঠন বিস্তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না।

এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য রাজ্য নেতারা কী উপায় ভেবেছেন, তা অমিত তাঁদের কাছে জানতে চান। রাজ্য নেতারা বলেন, আন্দোলন গড়ে তোলাই একমাত্র দাওয়াই। সে ব্যাপারে অমিতের পরামর্শ, বিষয়ের ভিড়ে হারিয়ে না গিয়ে বাছাই করা কিছু প্রশ্নে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিষয় বাছার ক্ষেত্রে দুর্নীতি, নারী নিগ্রহ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। এবং আন্দোলন রাজ্য স্তরে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। তা নিয়ে যেতে হবে নিচু তলায় মণ্ডল স্তর পর্যন্ত। রাজ্য নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, অন্য কোনও রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ করতে গেলে শাসক দলের সন্ত্রাসের মুখে পড়তে হয় না। এটা এ রাজ্যেরই বৈশিষ্ট্য। তা সত্ত্বেও সদস্য বেড়েছে প্রায় ২৫ গুণ। এটা খাটো করে দেখার মতো বিষয় নয়। এক রাজ্য নেতার কথায়, “আন্দোলন ছাড়া যে পথ নেই, তা সত্য। কিন্তু এ রাজ্যের কঠিন পরিস্থিতিটাও মাথায় রাখতে হবে।”

বিজেপি সূত্রের খবর, দলের বিদ্বজ্জন সেলের কয়েক জন নেতা দিন কয়েক আগে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং অমিতের সঙ্গে বৈঠক করেন। মন্ত্রী তথা এ রাজ্যের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও বৈঠকে ছিলেন। সেখানেও এ রাজ্যের ‘সুবর্ণ সুযোগ’ হাতছাড়া হওয়া কী ভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। অমিত জানান, কলকাতা পুরভোটের প্রচারে তাঁর আসার ইচ্ছা ছিল। বাছাই করা দক্ষ সংগঠকদের দলকেও কলকাতা পুরভোটের দায়িত্ব দিয়ে এখানে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে তিনি জেনেছেন, কলকাতা পুরভোটে দলের ফল খুব আশাব্যঞ্জক হওয়ার সম্ভাবনা কম। এমতাবস্থায় সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে তিনি প্রচারে এলে তাঁরই মুখরক্ষা করা কঠিন হতে পারে। বিজেপি সূত্রের খবর, পুরভোটের প্রার্থীদের নিজের নিজের বুথ কর্মীদের তালিকা দিতে বলা হয়েছিল। অনেকেই তা দিতে পারেননি। কারণ, বুথ কর্মী হওয়ার মতো পর্যাপ্ত লোকই তাঁদের হাতে নেই। এর ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, রাজ্য বিজেপি কলকাতার সব জায়গায় উপযুক্ত লোকেদের প্রার্থী করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE