Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গরম চাই কিন্তু, চপের দোকানে বাবুল

‘দিদিকে দেখছি না যে! দিদি কোথায়?’ বিজেপি-র মিছিলে এক বৃ্দ্ধার মুখে ‘দিদি’ শুনে প্রথমে বেশ চমকে গিয়েছিলেন দলের কর্মীরা। মিছিলের শেষ প্রান্তে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে একগাল হেসে সেই বৃদ্ধা বললেন, “ওই তো, দিদি চলে এসেছেন!” রবিবারের বিকেল। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে রোড-শো করতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা রটেও গিয়েছিল।

রবিবার বিকেলে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে রোড-শো করতে এসেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

রবিবার বিকেলে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে রোড-শো করতে এসেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

সুস্মিত হালদার
হাঁসখালি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৯
Share: Save:

‘দিদিকে দেখছি না যে! দিদি কোথায়?’

বিজেপি-র মিছিলে এক বৃ্দ্ধার মুখে ‘দিদি’ শুনে প্রথমে বেশ চমকে গিয়েছিলেন দলের কর্মীরা। মিছিলের শেষ প্রান্তে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে একগাল হেসে সেই বৃদ্ধা বললেন, “ওই তো, দিদি চলে এসেছেন!”

রবিবারের বিকেল। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে রোড-শো করতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা রটেও গিয়েছিল। ফলে বাদকুল্লা থেকে গাজনা পর্যন্ত দুপুর থেকে রাস্তার দু’ধারে ছিল কালো মাথার ভিড়। রাস্তার পাশের বাড়ি, দোকানের ছাদ, মায় গাছের উপরে পর্যন্ত লোক অপেক্ষা করছেন কখন মিছিলটা এ দিকে আসবে। অবশেষে অপেক্ষার অবসান। হাঁসখালিতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সেই বৃদ্ধা দেখতে পেলেন রূপাকে। খান পঁচিশেক গাড়ি, কয়েকশো মোটরবাইকের মিছিলটা তখন এগিয়ে চলেছে বগুলার দিকে।

মিছিলের সামনের সারিতে হুডখোলা জিপে প্রার্থীকে পাশে নিয়ে হাত নাড়ছেন বাবুল সুপ্রিয়। মিছিলের একেবারে শেষে সিদ্ধার্থনাথের সঙ্গে রূপা। আচমকা হাঁসখালি সেতুর মুখেই থেমে গেল বাবুলের গাড়ি। তড়িঘড়ি কর্মীরা ছুটলেন সে দিকে। কী ব্যাপার? বাবুল তখন রাস্তার পাশে গুমটি চপের দোকানে দাঁড়িয়ে একশো টাকার নোট হাতে বলছেন, “এক দম গরম চাই কিন্তু।” মুহূর্তের মধ্যে ভিড় জমে গেল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বাবুলকে কোনও রকমে গাড়িতে তুলে দিলেন। বাবুল তখনও বলে চলেছেন, “সবাইকে খাওয়ানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু তাতে যে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়ে যাবে!”


হাঁসখালিতে বিজেপির মিছিল। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন শিশির বাজোরিয়া ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

বিজেপি কর্মীরা যতক্ষণ পেরেছেন সিদ্ধার্থনাথের সঙ্গেই থাকার চেষ্টা করেছেন। অল্পবয়সীরা মেতেছিলেন বাবুল-ম্যাজিকে। আর মহিলারা ঝুঁকেছিলেন রূপার দিকে। রোড শো-য়ের শেষের দিকে এক বিজেপি কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হামলার প্রতিবাদে হাঁসখালির কাছে পথ অবরোধও হয়।

বগুলা, গাড়াপোতা ছাড়িয়ে গাজনার আগে গাড়ি থেকে নামলেন বাবুল। বিজেপির প্রার্থী মানবেন্দ্রনাথ রায়কে বললেন, “বড্ড ক্লান্ত, শরীর আর দিচ্ছে না।” দলের কর্মীরা অবুঝ। তাঁদের অনুরোধে ফের গাড়িতে উঠলেন বাবুল। তখন অন্ধকার নেমে এসেছে। গাড়ি থামল কিছুটা দূরে গাজনা বাজারের আগে। চা খাওয়ার পরে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে একপ্রস্ত নেচে তবেই রেহাই মিলল বাবুলের। ফেরার পথে খালবোয়ালিয়া মোড়ে থামল বাবুলের গাড়ি। সিপিএমের পথসভা চলছিল সেখানে। বাবুল হাঁটতে শুরু করলেন। পথসভার সামনে তিনি আসতেই সেখানকার ভিড়টা কিঞ্চিৎ ফাঁকা হয়ে গেল। সেই ভিড়ের একটা অংশকে বাবুলের সঙ্গে হাঁটতেও দেখা গেল। ছবিও তুললেন কেউ কেউ। যা দেখে বিজেপির এক কর্মীর ফুটনোট, “এ ভাবে সিপিএমের ভোটের একটা অংশ চলে এলেই কিস্তিমাত!”


নদিয়ার হরিণঘাটায় বিজেপির জনসভায় শমীক ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র

মিছিল শেষে বাবুল ও রূপাও বললেন, “যা বলার এ দিনের মানুষের ভিড় আর উন্মাদনাই বলে দিচ্ছে। আমরা আর কী বলব!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE