ফাইল চিত্র
ভিড়টা অপেক্ষা করছিল ভোর থেকে। ট্রলার পাড়ে ভিড়তেই তীব্র হল কান্নার রোল। দেহ নামানোর সময়ে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন অনেকে।
শেষমেশ জানা গেল দেহ মুক্তিপদ করণের (৫৫)। ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল এলাকার বাসিন্দা মুক্তিপদ সোমবার গিয়েছিলেন সমুদ্রে ইলিশ ধরতে। প্রবল ঝড় ওঠে। সঙ্গে বিশাল ঢেউ। কেঁদোদ্বীপের কাছে ট্রলার উল্টে তলিয়ে যান ১৯ জন। তাঁদেরই একজন মুক্তিপদ। বেপাত্তা তিনটি ট্রলারের একটির এ দিন খোঁজ মিলেছে বলে উপকূল রক্ষী বাহিনী সূত্রের খবর।
কিন্তু সোমবার সামুদ্রিক ঝড়ের পূর্বাভাস কি ছিল না মৎস্যজীবীদের কাছে? ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিসারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘সোমবার বা তার আগে কোনও সতর্কবার্তা আমরা পাইনি। দুর্ঘটনা ঘটার পরে উপকূল রক্ষী বাহিনী একটি সতর্কবার্তা পাঠায়। কিন্তু তার আগে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে।’’
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক অধিকর্তার দাবি, সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘কে কেন সতর্কবার্তা পাননি, তা বলতে পারব না।’’ ওই কর্তা জানালেন, আগে আলিপুরের হাওয়া অফিস থেকে সরাসরি মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্তাদের মোবাইলে সতর্কবার্তা যেত। এখন সেই নিয়ম চালু নেই। মৎস্য দফতরে বার্তা পাঠানো হয়। হয় তো সেই বার্তা নীচের স্তরে পৌঁছয়নি, মত হাওয়া অফিসের ওই কর্তার।
ডায়মন্ড হারবার মৎস্য দফতরের সহ অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘আগে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে নিয়মিত সতর্কবার্তা পেতাম। এখন পাচ্ছি না। কেন পাচ্ছি না জানি না।’’ উপকূলরক্ষী বাহিনীর হলদিয়া অফিসের কম্যান্ডারকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। আবহাওয়া-সংক্রান্ত সতর্কবার্তা থাকলে তা যেন তাঁদের জানানো হয়, সেই অনুরোধ করেছেন।
উদ্ধার কাজে উপকূল রক্ষী বা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীদের। বিজন বলেন, ‘‘আমাদের ১০টি ট্রলার উদ্ধারের কাজ করছে। আমাদের লোকজন মাঝসমুদ্রে বিপদে পড়লে দেখার কেউ নেই। নিজেরাই নিজেদের ভরসা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy