প্রতীকী ছবি।
দৃষ্টিহীন ভোটদাতারা হাতে পাচ্ছেন ‘অথেন্টিকেটেড ফোটো ভোটার্স স্লিপ’। তাতে রয়েছে ব্রেল পদ্ধতি ব্যবহারের সুবিধা। এ বার ভোটার সংক্রান্ত আবেদনপত্রেও ব্রেল পদ্ধতির ব্যবহার করা হচ্ছে। যা এ দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে প্রথম বলে জানাচ্ছেন অনেকেই। আর এই পথ দেখাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, আরও নির্দিষ্ট করে বললে দক্ষিণ দিনাজপুর।
২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবস। ওই দিনেই এই ব্রেল পদ্ধতি সংবলিত আবেদনপত্রের বিষয়টি দক্ষিণ দিনাজপুরে আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করার কথা। নতুন ভোটার হওয়া, নাম বা পরিচয়পত্র (এপিক) সংশোধন বা বিয়োজনের আবেদনপত্রেও ব্রেল পদ্ধতি ব্যবহারের পথ খুলছে। অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারির পরে দক্ষিণ দিনাজপুরে ভোটার সংক্রান্ত আবেদনপত্রে ব্রেল পদ্ধতিতে তা পূরণ করার সুযোগ পেতে পারেন দৃষ্টিহীনেরা। এ বারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। তবে তালিকায় নাম নথিভুক্তি কিংবা সংশোধন বা বিয়োজনের কাজ চলে সারা বছরই।
ভোটার আবেদনপত্রে ব্রেল ব্যবহারের পরিকল্পনা কেন? দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কর্তাদের মতে, ভোটার হতে কিংবা সংশোধনের আবেদনপত্র পূরণের ক্ষেত্রে দৃষ্টিহীন মানুষজন অন্যের উপরে নির্ভর করতে বাধ্য হন। তাঁরা মুখে বলে দেওয়ার পরে তা শুনে অন্য কেউ সেই সব আবেদনপত্র পূরণ করে দেন। ব্রেলের ব্যবহার চালু হলে দৃষ্টিহীন লোকজন আবেদনপত্র নিজেরাই পড়ে পূরণ করতে পারবেন। অন্যের উপরে আর নির্ভর করতে হতে হবে না। এই ভাবনা থেকেই দৃষ্টিহীনদের জন্য এই ব্রেল পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে।
আবেদনপত্রে ব্রেল পদ্ধতির ব্যবহার প্রথম হলেও ‘এপিক’ বা ভোটার পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে ব্রেল চালু হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে তা শুরু হয় কর্নাটকে।
ধীরে ধীরে সারা দেশেই ভোটার পরিচয়পত্রে ব্রেলের ব্যবহার শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।
মে মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার উপনির্বাচনে ব্রেল সংবলিত ভোটার্স স্লিপ ব্যবহার করা হয়েছিল। তা ছাড়াও কী ভাবে ভোট দিতে হবে, লোকসভা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন বুথে সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা ‘ভিনাইল বোর্ড’-এ থাকবে। সেখানেও ব্রেল পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। ওই বোর্ডের উপরের অংশে সাধারণ মানুষের জন্য ভোট পদ্ধতির কথা লেখা থাকবে আর নীচের অংশে থাকবে ব্রেল পদ্ধতিতে লেখা নির্দেশিকা। যা পড়তে পারবেন দৃষ্টিহীনেরা। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেও (ইভিএম) ব্রেল পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন তাঁরা।
কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্রেল পদ্ধতির ব্যবহারে শুধু যে দৃষ্টিহীনদের ভোটের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে, তা-ই নয়। এতে একটি সামাজিক বার্তাও রয়েছে।’’ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের থিম ‘অ্যাক্সেসেবল ইলেকশনস’ বা সুগম নির্বাচনের সঙ্গে যে-বার্তা সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করছেন কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy