Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

সময় বেঁধে নিয়োগ প্রাথমিকে: হাইকোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফের হাইকোর্টের একক বেঞ্চে আসা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলায় ধাক্কা খেল রাজ্য।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৩
Share: Save:

কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চে হার। ডিভিশন বেঞ্চে জিত। সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফের হাইকোর্টের একক বেঞ্চে আসা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলায় ধাক্কা খেল রাজ্য।

উত্তর ২৪ পরগনা ও মালদহ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগের জন্য শুক্রবার তিন দফায় সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। তাঁর নির্দেশ: প্রথমত, নিয়োগের জন্য রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই দুই জেলাকে ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের নামের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তার দু’সপ্তাহের মধ্যে শূন্য পদের তালিকা তৈরি করতে হবে। তৃতীয়ত, শূন্য পদের তালিকা তৈরির দু’সপ্তাহের মধ্যে প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিতে হবে। প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত পদ তৈরির ক্ষেত্রে সক্রিয় পদক্ষেপ করতে হবে।

নিয়োগ পরীক্ষার প্রায় এক যুগ পরে প্রাথমিক স্কুলে ওই দুই জেলার প্রার্থীদের চাকরির জট খুলল এই নির্দেশে। পরীক্ষার পর থেকে তাঁদের নিয়োগ আটকে আছে। বিস্তর দৌড়ঝাঁপের পরে দুই জেলার প্রার্থীরা তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ২০১৭ সালে। দীর্ঘদিনের আইনি বিবাদ শেষে এ দিন বিচারপতি সময় বেঁধে নিয়োগ পর্ব সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি জানান, প্রতি বছরই অবসর, পদত্যাগ ও কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুর কারণে কিছু কিছু পদ শূন্য হয়। তাই প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা যাতে নিয়োগপত্র পান, রাজ্য সরকারকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত মালদহ জেলায় ১৪৯২টি শিক্ষকপদ শূন্য ছিল। আর ২০১৯ সালের ২১ মে পর্যন্ত হিসেব, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় খালি আছে ১১০০টি পদ।

আইনজীবীরা জানান, ২০০৯ সালে, বাম আমলে জেলায় জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তার একটি প্যানেলও তৈরি হয়। কিন্তু দুই ২৪ পরগনা, মালদহ ও হাওড়ায় নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার সেই প্যানেল বাতিল করে দেয় এবং ২০১৪ সালে নতুন ভাবে ইন্টারভিউ নিয়ে পৃথক প্যানেল তৈরি করা হয়। তার মধ্যে এ দিনের নির্দেশে শুধু উত্তর ২৪ পরগনা ও মালদহ জেলার ক্ষেত্রেই নিয়োগ-নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২০১৮ সালে এই মামলায় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে রাজ্য সরকার। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তেরডিভিশন বেঞ্চ রায় দেন সরকারের অনুকূলে। চাকরিপ্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে গেলে শীর্ষ আদালত জানায়, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চই মামলাটির নিষ্পত্তি করবে। গত ২২ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে। এ দিনের রায়ে নিয়োগের সময় বেঁধে দেন তিনি।

বিচারপতি তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন, ইন্টারভিউয়ে পাশ করলেই কোনও চাকরিপ্রার্থী নিয়োগপত্র পাওয়ার অধিকারী হন না। কিন্তু কেন তাঁকে নিয়োগ করা হচ্ছে না, তারও সন্তোষজনক উত্তর প্রয়োজন। ক্ষমতা আছে বলেই নিয়োগকর্তারা ইচ্ছেমতো তা ব্যবহার করতে পারেন না। আদালত সূত্রের খবর, কেন এত দিন নিয়োগ করা হয়নি, রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা আদালতে তার সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Primary teachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE