Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কোর্টের ইচ্ছায় ‘খারিজ’ মোদীর উদ্বোধন

শুক্রবার মোদীর ওই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র কোনও যোগাযোগ করেনি। শুধু কর্মসূচি জানিয়েছিল। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না কলকাতা হাইকোর্টের কোনও প্রতিনিধিও।

সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন।

সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৩
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ ‘উদ্বোধন’ করে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনিবার কলকাতা হাইকোর্ট লিখিত ভাবে রাজ্য সরকারকে বলল, সার্কিট বেঞ্চের ‘আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন’ হবে ৯ মার্চ। সেখানে কাজ শুরু হবে ১১ মার্চ থেকে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর শুক্রবারের ওই কর্মসূচি কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়ল বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

শুক্রবার মোদীর ওই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র কোনও যোগাযোগ করেনি। শুধু কর্মসূচি জানিয়েছিল। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না কলকাতা হাইকোর্টের কোনও প্রতিনিধিও। এ ভাবে অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের কাছে লিখিত ভাবে ক্ষোভ জানিয়েছিল রাজ্য। কারণ, কয়েক মাস আগে ওই সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি উদ্যোগী হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ওই উদ্বোধনে হাজির থাকবেন বলে স্থির করেছিলেন। কিন্তু দিল্লির ছাড়পত্র না আসায় তখন তা স্থগিত হয়ে যায়। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার ময়নাগুড়ির সভামঞ্চ থেকে রিমোটে সার্কিট বেঞ্চের ‘উদ্বোধন’ করে দেন।

মুখ্যমন্ত্রী ৯ মার্চের অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন কি না, এখনই তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। এর মধ্যে নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গেলে তাঁর উপস্থিতি নির্বাচনী বিধি-নিষেধের আওতায় পড়ে যাবে কি না, তাও নবান্নের বিবেচনায় থাকবে। তবে নীতিগত ভাবে রাজ্য যে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে খুশি এবং সর্বরকম সহযোগিতায় প্রস্তুত, তা সরকারের শীর্ষ মহল থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল আমারও

প্রধানমন্ত্রীর ‘উদ্বোধন’ করে যাওয়া সার্কিট বেঞ্চের ‘আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন’-এর যে সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট নিয়েছে, সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া অবশ্য যথেষ্ট সংযত। এ দিন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে যা জানিয়েছে, আমরা সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করব।’’ প্রধানমন্ত্রী যে শুক্রবার ওই সার্কিট বেঞ্চ ‘উদ্বোধন’ করে গেলেন, সে সম্পর্কেও মমতার অভিমত জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় কী করেছেন বা বলেছেন, তা নিয়ে এখন আর কিছু বলতে চাই না। যাঁরা করেছেন, তাঁরা বুঝবেন। আমি এটুকুই বলব, সার্কিট বেঞ্চ হাইকোর্টের। তাই তাঁদের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য।’’

এ দিন রাজ্যের বিচারবিভাগের সচিবের কাছে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল বিভাসরঞ্জন দে-র চিঠি পৌঁছয়। তা থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি সার্কিট বেঞ্চ চালুর সম্মতি দিয়েছেন। সেই মতো হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ১১ মার্চ থেকে সার্কিট বেঞ্চের কাজ চালু করতে চান। ওই বেঞ্চের ‘আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের’ জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ৯ মার্চ তারিখটি ধার্য করেছেন বলেও জানানো হয়েছে।

চিঠি পাওয়ার পরেই সরকারের তরফে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। তদারকির জন্য পদস্থ অফিসারদের জলপাইগুড়ি পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE