বন্ধ: তৃণমূলের কার্যালয়ে তালা। চন্দ্রকোনায়। নিজস্ব চিত্র
জমিতে পাম্প হাউস হবে। পরিবারের একজন চাকরি পাবে। আর সমপরিমাণ আবাদি জমি নাকি ফেরতও দেওয়া হবে।
এমনই একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক আদিবাসী পরিবারের হাতে থাকা প্রায় আট কাঠা খাসজমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আড়াই বছর কেটে গেলেও কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখা হয়নি। উল্টে ওই জমিতে মাথা তুলেছে বাহারি দো’তলা তৃণমূল কার্যালয়। শেষমেশ শনিবার রাতে আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতারা গিয়ে তৃণমূলের ওই অঞ্চল কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। লাগানো হল সংগঠনের হলুদ-সবুজ পতাকাও।
লোকসভা ভোটের পর থেকে পার্টি অফিস দখল-পুনর্দখলের রাজনীতি চলছিলই। তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চন্দ্রকোনার এই ঘটনা।
ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের জেলা সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন মুর্মু বলেন, “আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমিতে পার্টি অফিস হবে আর পরিবারটি বঞ্চিত হবে, এটা মানা যায় না। আমরা বিষয়টি জেনে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে নিষ্পত্তি করার আর্জি জানাই। কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।” ওই জমি যাঁর, সেই বিজয় সরেনেরও ক্ষোভ, ‘‘ওই জমিতে চাষ করে সংসার চলত। এখন অন্যের জমি চাষ করি। চাকরির কথা বললে তৃণমূল নেতারা কানে নেয় না। তাই সংগঠনকে জানিয়েছিলাম।”
গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আলোচনা করে দলের স্থানীয় নেতাদের সমস্যা মিটিয়ে নিতে বলা হয়েছে।” রবিবারই রামজীবনপুর ফাঁড়িতে পুলিশ-প্রশাসন, তৃণমূল ও আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা একপ্রস্থ আলোচনায় বসেন। সেখানে কার্যালয়ের তালা খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আদিবাসী নেতারা। তবে ওই জমিতে পাম্প হাউস তৈরি বা চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
চন্দ্রকোনার শ্রীনগর চৌকানে মূল সড়কের ধারে প্রায় আট কাঠা সরকারি খাসজমি দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজয় সরেনের পরিবার চাষ করত। বিজয়ের মা লক্ষ্মী সরেনের অভিযোগ, “আমাদের বলা হয়েছিল এলাকার মানুষের স্বার্থে পানীয় জলের পাম্প হাউস তৈরি হবে। কাছাকাছি একই পরিমাণ চাষযোগ্য জমি ও পাম্পে চাকরির কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। কাঠা দুয়েক পতিত জমি দিয়েই দায়িত্ব সেরেছে তৃণমূল।”
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তথা তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির অন্যতম সদস্য শঙ্কর চৌধুরী পাল্টা বলছেন, “বিজয় সরেনদের দু’কাঠা জমি দেওয়া হয়েছে। বাড়িও দেওয়া হবে। আর চাকরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy