Advertisement
১০ মে ২০২৪
chhatradhar mahato

মাওবাদী-স্মৃতিতে বিদ্ধ ছত্রধর

তাঁকে ‘মাওবাদী নেতা’ বলে কটাক্ষ করা হচ্ছে। কিম-জং-উনের সঙ্গেও তুলনা টানা হয়েছে। 

 সমাজমাধ্যম ছেয়েছে এমনই সব পোস্টে। —নিজস্ব চিত্র

সমাজমাধ্যম ছেয়েছে এমনই সব পোস্টে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০০:০৪
Share: Save:

তৃণমূলে অন্যতম রাজ্য সম্পাদকের পদ পাওয়ার পরেই সমাজমাধ্যমে আক্রমণের নিশানা হয়ে উঠেছেন জনগণের কমিটির প্রাক্তন নেতা ছত্রধর মাহাতো। তাঁকে ‘মাওবাদী নেতা’ বলে কটাক্ষ করা হচ্ছে। কিম-জং-উনের সঙ্গেও তুলনা টানা হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মুর দাবি, ‘‘বিজেপি-র পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই ওরা সমাজমাধ্যমে কুৎসা করছে।’’ ছত্রধর নিজেও বলছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষেরা ভয় পেয়েছেন। তাই বিজেপি-র লোকজন কুৎসা রটাচ্ছেন।’’ তবে বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর বক্তব্য, ‘‘ছত্রধরকে জেলাবাসী মাওবাদী হিসেবেই চেনেন। তাঁকে দলীয় পদ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদী-তৃণমূল আঁতাতকেই মান্যতা দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ তাই সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ করছেন।’’
আড়ালে তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের একাংশও বলছেন, ‘‘ছত্রধর সম্পর্কে আমজনতার মনোভাব যাচাই না করে তাঁকে এ ভাবে দলের রাজ্যস্তরের পদে না বসালেই হয়তো ভাল হত। এতে বিরোধীরা তৃণমূল-মাওবাদী যোগসাজশের অভিযোগ তুলে ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে।’’
সমাজমাধ্যমে ওই সব পোস্টে সরাসরি ছত্রধরকে মাওবাদী অ্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গলমহলের অশান্তিপর্বে খুন-সন্ত্রাসের নায়ক বলা হয়েছে। বেলপাহাড়ির আদি বাসিন্দা এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘মাননীয়া আপনি জঙ্গলমহলের মানুষকে আরও একটা কারণ দিলেন, আপনাকে ভোট না দেওয়ার’। ঝাড়গ্রামের এক তরুণ পরিবেশকর্মী আবার ২০০৯ সালে গণ-আদালতে দুই গ্রামবাসীকে শাস্তি দেওয়ার প্রকাশিত পুরনো ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতো তৃণমূলের রাজ্য কমিটির মেম্বার। বেশ ভাল খবর’। আর এক জন লিখেছেন, ‘এই ছত্রধর কে জানেন? জঙ্গলমহল জুড়ে তখন কিম-জং-উনের মতো স্বৈরাচারী ক্ষমতা। মাওবাদী প্রধান কিষেনজি ও জনগণের কমিটির প্রধান ছত্রধর মিলে কত মেয়ের সিঁথির সিঁদুর মুছেছে, কত মায়ের কোল খালি করেছে, কত শিশুকে অনাথ করেছে তার ইয়ত্তা নেই’।
শাসকদলের চিন্তার অন্য কারণও রয়েছে। মাওবাদী হানায় নিহত ও নিখোঁজদের পরিজনদের অধিকাংশ চাকরি পাননি। তাঁরা প্রশাসনিক মহলে লাগাতার দরবার করছেন তাঁরা। অন্য দিকে মূলস্রোতে ফেরা মাওবাদী ও জনগণের কমিটির নেতারা চাকরি ও তৃণমূলে পদ পেয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ছত্রধরের দুই ছেলেও চাকরি পেয়েছেন। তাঁর স্ত্রী নিয়তিকে রাজ্য সমাজ কল্যাণ পর্ষদের সদস্য করা হয়েছে। সব মিলিয়ে শাসকদলের কাছে ছত্রধর সম্পর্কে নেটিজেনদের বিষোদ্গার কাঁটার মতো বিঁধছে।
ছত্রধর অবশ্য ভরসা জুগিয়েই বলছেন, ‘‘আমি চিরকাল সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। ২০১১ সালে জেল থেকে ভোটে লড়েছি। তৃণমূল নেত্রী দলের পদ দিয়েছেন। আমি তাঁর মর্যাদা রাখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Chhatradhar Mahato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE