Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নিহত বিজেপি-তৃণমূল কর্মীদের পরিবারের কাছে বাম-কংগ্রেস

রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন বন্ধ করে শান্তির দাবিতে একসঙ্গে পথে নেমেছে কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দল। মথুরাপুরে নিহত সিপিএম কর্মী রাজু হালদারের বাড়ির এলাকা লালপুরে সোমবার গিয়েছিলেন তাঁরা।

সন্দেশখালিতে গিয়ে নিহত বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলের কর্মীদের পরিজনদের সঙ্গেই দেখা করলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। —নিজস্ব চিত্র।

সন্দেশখালিতে গিয়ে নিহত বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলের কর্মীদের পরিজনদের সঙ্গেই দেখা করলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০১:০০
Share: Save:

বিজেপির সংসদীয় দল গিয়েছিল এর আগে। গিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাও। কিন্তু তাঁরা নিজেদের দলের কর্মীদের বাড়িতেই গিয়েছিলেন। সন্দেশখালিতে গিয়ে এ বার নিহত বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলের কর্মীদের পরিজনদের সঙ্গেই দেখা করলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত অন্য দলের কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলার এমন নজির সাম্প্রতিক কালে বিরল।

রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন বন্ধ করে শান্তির দাবিতে একসঙ্গে পথে নেমেছে কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দল। মথুরাপুরে নিহত সিপিএম কর্মী রাজু হালদারের বাড়ির এলাকা লালপুরে সোমবার গিয়েছিলেন তাঁরা। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিধায়কদের যৌথ প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়ে ভাঙ্গিপাড়ায় নিহত দুই বিজেপি কর্মী প্রদীপ ও সুকান্ত মণ্ডল এবং তৃণমূলের কায়ুম মোল্লার বাড়িতে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কায়ুমের বাবা এ দিন সেখানে ছিলেন না। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নবান্নে, পরিবারের এক জনকে সরকার চাকরি দেবে বলে। একই সংঘর্ষে নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিজন চাকরি পাবেন অথচ বিজেপির দু’জনের পরিবার পাবে না— এই বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মান্নান ও সুজনবাবু।

কী ভাবে সন্দেশখালিতে সংঘর্ষ বেধেছিল, তা নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের পরিবার দু’রকম বয়ান দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তিনটি পরিবারই বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের বলেছে, তারা হানাহানি চায় না। আবার নিহতদের পরিজনদের কাছ থেকেই বিধায়কেরা জেনেছেন, এলাকায় সকলেই ছিলেন তৃণমূলের। লোকসভা ভোটে স্থানীয় বুথে বিজেপি ‘লিড’ পাওয়ার পরে জানা যায়, ঘাসফুলের দল করেও কেউ কেউ পদ্মফুলকে সমর্থন করেছেন। সংঘাতের শুরু সেখান থেকেই। মান্নান ও সুজনবাবু তাঁদের বলেন, যে যার নিজের দল করুন। কিন্তু অশান্তি যাতে না বাধে, সে কথাই তাঁরা বলতে এসেছেন। বিরোধী দলনেতা ও বাম পরিষদীয় নেতার সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র ও কাজী আব্দুর রহিম, সিপিএমের বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়, তন্ময় ভট্টাচার্য ও সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতৃত্বও হাজির ছিলেন।

মথুরাপুরে নিহত সিপিএম কর্মী রাজু হালদারের বাড়ির এলাকা লালপুরে সোমবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। —নিজস্ব চিত্র।

মান্নান পরে বলেন, ‘‘দলের রং দেখে আমরা যাইনি। আমরা চাই, রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক, যে কোনও ধরনের বিভাজন ও হিংসা বন্ধ হোক।’’ সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ বা চাকরির ব্যবস্থা করতে গিয়েও পক্ষপাত দেখাচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের উচিত নিরপেক্ষ ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা।’’ সন্দেশখালি থেকে ফেরার পথে বিধাননগরে অন্দোলনরত এমএসকে এবং এসএসকে শিক্ষকদের সঙ্গেও দেখা করতে গিয়েছিলেন মান্নান ও সুজনবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE