প্রতীকী ছবি।
‘নিচু জাতে’র হওয়ায় প্রকাশ্যে চলত অপমান। সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনও। সোনার দোকানে কর্মরত এক নাবালকের অপমৃত্যুতে দোকানের মালিকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন মৃত কিশোরের বাবা। ‘নিচু জাত’ হওয়ায় তাঁর ছেলেকে খুন করা হয় বলে পুলিশে অভিযোগও করেছেন কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের বাসুদেববেড়িয়ার বাসিন্দা রাজকৃষ্ণ শিট।
অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাইনি। ওই শিশুশ্রমিকের মৃত্যুতে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
১৭ অক্টোবর কাঁথি পুর-এলাকার কুমারপুরে এক সোনার দোকানের কারখানা থেকে সাগর শিট (১৪) নামে ওই নাবালকের ঝুলন্ত দেহ মেলে। ওই দোকানেই কাজ করত সাগর। তার গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ছিল। ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে ওই দিনই কাঁথি থানায় অভিযোগ জানান রাজকৃষ্ণ। ১৮ অক্টোবর কাঁথির মহকুমাশাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। রাজকৃষ্ণ জানান, তিনি নিজে প্রতিবন্ধী। সাগর ছিল তাঁর বড় ছেলে। পরিবারের অভাবের কথা জানতে পেরেই সোনার দোকানের মালিক বলরাম কর সাগরকে কাজে নেন।
রাজকৃষ্ণের অভিযোগ, ‘‘আমরা ধোপা সম্প্রদায়ভুক্ত জানতে পেরে দোকান মালিক ছেলেকে সকলের সামনে জাত তুলে গালিগালাজ করত। ছেলের খাওয়ার থালা-বাসন আলাদা করে দিয়েছিল। নিচু জাত বলে মারধরও করত। ছেলেকে কয়েক বার আত্মহত্যা করতেও বলে ওই দোকান মালিক।’’ অত্যাচার সয়েই দু’মাস সেখানে কাজ করে সাগর। মাঝে বাড়িতে পালিয়েও গিয়েছিল। তখন রাজকৃষ্ণই তাঁকে বুঝিয়ে কাজের জায়গায় দিয়ে আসে।
অভিযুক্ত বলরামকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা যায়নি ফোনেও। তাঁর দোকানে বন্ধ। এক কর্মচারী জানান, মালিক এলাকায় নেই।
চার দিন কেটে গেলেও কোনও পদক্ষেপ না হওয়ায় এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসায় এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয় এক সংগঠন। এসডিপিও-র সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় তারা। এসইউসি-র ছাত্রনেতা বিশ্বজিৎ রায়েরও বক্তব্য, ‘‘এই যুগে এমন বৈষম্য মানা যায় না। দোকান মালিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই শিশুশ্রমিককে জাতপাতের জন্য দোকানের মালিক ভর্ৎসনা করত বলে অভিযোগ পেয়েছি। প্রশাসনিকভাবেও তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy