Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

আমলা মা বৈঠকে, ত্রস্ত নবান্ন

বুধবার সকালে নবান্ন থেকে বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের দুই কর্তাকে স্বেচ্ছা-পর্যবেক্ষণের জন্য বাড়িতে থাকতে বলা হয়। স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি এ দিন অফিসে আসেননি।

এফআরআরও দফতর জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে মহাকরণে (বাঁ দিকে)। করোনা-আক্রান্ত তরুণের মা এই দফতরেরই আধিকারিক। (ডান দিকে) নবান্নে বন্ধ ওই আমলার ঘর। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী ও নিজস্ব চিত্র

এফআরআরও দফতর জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে মহাকরণে (বাঁ দিকে)। করোনা-আক্রান্ত তরুণের মা এই দফতরেরই আধিকারিক। (ডান দিকে) নবান্নে বন্ধ ওই আমলার ঘর। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী ও নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ০৪:১৬
Share: Save:

বিলেতফেরত তরুণ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় কলকাতা-সহ সারা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নেও।

কারণ, ওই তরুণের মা, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব গত সোমবার নিজে নবান্নে গিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র ছাড়াও বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের দুই অফিসার উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে বুধবার থেকে তাঁরা বাড়িতেই আছেন। আপাতত আরও কয়েক দিন স্বেচ্ছা-পর্যবেক্ষণে থাকবেন তাঁরা। এ কথা প্রকাশ্যে আসতেই গত তিন দিনে যাঁরাই নবান্নে পা দিয়েছেন, তাঁরা প্রবল আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে কত বিদেশি এ দেশে ঢুকছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে কি না, কত জনকে করোনা সংক্রমণের সন্দেহে আলাদা করা হয়েছে, তা জানতে চেয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব। স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবই (আক্রান্ত তরুণের মা) চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন এফআরআরও বা বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিবের ঘরে কেন্দ্রের দুই কর্তার সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন ডিজি বীরেন্দ্র এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব। বঙ্গে বিদেশিদের যাতায়াত নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয় সেই বৈঠকে।

স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবের ছেলে করোনায় আক্রান্ত বলে রিপোর্ট আসে মঙ্গলবার। রাজারহাটের কোয়রান্টিনে পাঠানো হয় ওই আমলা, তাঁর স্বামী এবং তাঁদের গাড়ির চালককে। প্রশাসনিক মহলে হইচই শুরু হয়ে যায়। বুধবার সকালে নবান্ন থেকে বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের দুই কর্তাকে স্বেচ্ছা-পর্যবেক্ষণের জন্য বাড়িতে থাকতে বলা হয়। স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি এ দিন অফিসে আসেননি। স্বরাষ্ট্রসচিব এ দিন বাড়ি থেকেই কাজ করেছেন। সন্ধ্যায় রিপোর্ট আসে, স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবের করোনা-সংক্রমণ হয়নি। তবে তাঁকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।

সোমবারের বৈঠকের পরে স্বরাষ্ট্রসচিব নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা করোনা প্রতিরোধ বৈঠকে গিয়েছিলেন। তিনি বসেছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ এবং স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারের ঠিক মাঝখানে। সোমবার স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পরে ডিজি-ও হাজির হন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব গৌতম সান্যালের পাশে বসেন তিনি। ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে উদ্বেগ রয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আলাপনবাবুর স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডাকা উপাচার্যদের ডাকা বৈঠকে ছিলেন। বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের কর্তারাও নিজের অফিসে ফিরে অন্তত ৫০ জন অফিসার ও কর্মীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। আর আক্রান্ত তরুণের মা দু’দিন ধরে মহাকরণ ও নবান্নে নিজের ঘর, আবাসন-সহ সর্বত্র ঘুরেছেন। ফলে এখন ঠিক ক’জন করোনা ভাইরাসের জীবাণু বহন করছেন, সেই প্রশ্ন ঘিরে স্বাস্থ্যকর্তাদের উদ্বেগ কাটছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Special Home Secretary Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE