চিন্তায় আসানসোলের পর্যটক দল। নিজস্ব চিত্র
বেড়াতে গিয়ে উত্তরাখণ্ডের চৌকরিতে আটকে পড়েছেন আসানসোলের কয়েকজন পর্যটক। ২৭ জনের ওই পর্যটক দলটির সদস্যেরা তাঁদের বাড়ি ফেরানোর জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, দেশ জুড়ে ‘লকডাউন’ শুরু হয়ে যাওয়ায় এখনই ওই দলটিকে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখার আর্জি জানানো হয়েছে উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনকে। পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য সেখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
বুধবার ওই পর্যটক দলের ম্যানেজার শান্তনু সরকার জানান, স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের একটি রিসর্টে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। সেখানকার মহকুমাশাসক কয়েকবার রিসর্টে এসে খোঁজখবরও নিয়ে গিয়েছেন। ওষুধ-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাজার থেকে কিনে আনার জন্য একটি গাড়িও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
শান্তনুবাবু জানান, ১৩ মার্চ তাঁরা আসানসোল থেকে যাত্রা শুরু করেন। তখন করোনা নিয়ে কোনও রকম বিধিনিষেধ জারি হয়নি। বিষয়টি সম্পর্কে তাঁদেরও বিশদ কিছু জানা ছিল না। উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন পর্যটনস্থল ঘুরে ২১ মার্চ তাঁরা পৌঁছন চৌকরিতে। দু’দিন সেখানে কাটিয়ে ২৪ মার্চ কাঠগুদাম থেকে বাগ এক্সপ্রেস ধরে ফিরে আসার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু এরই মধ্যে ২২ মার্চ ‘জনতা কার্ফু’ ঘোষণা হয়। তার পরে ট্রেন চলাচলও আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিপাকে পড়েন তাঁরা। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ দিনের জন্য সারা দেশে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছেন। এর পরেই স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে, এখনই সেখান থেকে তাঁদের বেরনোর কোনও উপায় নেই। তাতে তাঁরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন বলে জানান শান্তনুবাবু। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে তাঁরা আর্জি জানিয়েছেন, যে ভাবে হোক তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। করোনার বিষয়ে কি তাঁরা জানতেন না? শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘ভারতে এমন পরিস্থিতি হবে বুঝতে পারিনি। জানলে বাড়ি থেকে বেরোতাম না!’’
ওই পর্যটক দলের সদস্য গোলক চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এত দিন আটকে থাকা সম্ভব নয়। আমরা চাই, প্রশাসন পদক্ষেপ করে আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’’ পর্যটক দলটির আর এক সদস্য তথা ইসিএলের কর্মী প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ফোনে বলেন, ‘‘এখানে খুব ঠান্ডা। আমাদের দলের সদস্যদের অনেকেরই বয়স ৫৪ বছরের বেশি। ফলে, শারীরিক সমস্যাও হচ্ছে। তাই ফিরতে পারলে উপকার হয়।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই দলটির উত্তরাখণ্ডে আটকে পড়ার খবর মঙ্গলবার তাঁদের কাছে পৌঁছয়। প্রশাসনের আধিকারিকেরা বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। জিতেন্দ্রবাবু জানান, পর্যটক দলটির সঙ্গে যোগাযোগ করে যাবতীয় তথ্য নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে ওঁদের ওখান থেকে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। উত্তরাখণ্ডের আঞ্চলিক প্রশাসনকে ওঁদের দেখভাল করার অনুরোধ করা হয়েছে। ওঁরা এখন নিরাপদেই আছেন। এর পরে যদি কোনও সমস্যা হয়, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy