মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
রাজ্যের কোভিড মানচিত্রে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়াকে ‘হাই রিস্ক’ জেলা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে মঙ্গলবার। এদিনই সেই ঝুঁকির মাত্রা প্রমাণ করে দিল এই চার জেলার মধ্যে দু’টির কোভিড পরিসংখ্যান। রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা উত্তর ২৪ পরগনায় ১৮, কলকাতায় ১০। এই প্রথম কোনও জেলার মৃতের সংখ্যা শহরকে টপকে গেল।
আট জেলায় কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে বিশেষ দল তৈরি করল রাজ্য সরকার। প্রত্যেক দলের নেতৃত্বে একজন করে আইএএস অফিসার থাকবেন। রাজ্যস্তরের সঙ্গে জেলাগুলির সমন্বয়ের বিষয়টি দেখভাল করবেন তাঁরা। মঙ্গলবার কোভিড-পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আটটা জেলায়, যেখানে কোভিড বেশি হচ্ছে, সেখানে আটজন সিনিয়র আইএএস অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক, পুলিশ, বিডিও, এসডিও, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে কাজ করবেন তাঁরা। আরও সক্রিয় সমন্বয়ের জন্য দলগুলি তৈরি হল।’’
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে কোভিড-পরিকাঠামো দেখভাল করবেন আইএএস অফিসার মনোজ পন্থ। পরীক্ষা এবং ল্যাবরেটরির দায়িত্বে বিনোদ কুমার এবং শরদ দ্বিবেদী, সেফ হোমের দায়িত্বে সৌমিত্রমোহন, মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থাপনায় বিনোদ কুমার, কোভিড-ব্যবস্থাপনায় শুভাঞ্জন দাস, টেলি-পরামর্শের তত্ত্বাবধানে সঞ্জয় বনসল, তথ্য ব্যবস্থাপনায় সুমিত গুপ্ত এবং কোভিড যোদ্ধা ক্লাবের দায়িত্ব পালন করবেন মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বিশেষ ভাবে নজরে থাকা জেলাগুলির মধ্যে হাওড়ায় রাজেশ পাণ্ডে, উত্তর ২৪ পরগনায় মনোজ পন্থ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নবীন প্রকাশ, হুগলিতে মনীশ জৈন এবং কলকাতায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নোডাল অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন।
সরকার এ দিন জানিয়েছে, ১৫ অগস্টের মধ্যে ২৫ হাজার কোভিড পরীক্ষা এবং ২ লক্ষ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার লক্ষমাত্রা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, ‘ম্যানেজিং ক্রিটিক্যাল কোভিড পেশেন্টস’ পদ্ধতি ৩১ জুলাই থেকে চালু হবে। মমতার কথায়, ‘‘অন্য রোগ রয়েছে অথচ যাঁর কোভিড ধরা পড়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা হবে। অনলাইন নজরদারির ব্যবস্থা চলছে। প্রত্যেক গুরুতর অসুস্থ রোগীর রিপোর্ট রাখা হবে। ২৪*৭ টোল-ফ্রি ব্যবস্থায় টেলি মেডিসিন, অ্যাম্বুল্যান্স, হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা হবে। ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ নম্বরে ফোন করলে এই সুবিধা মিলবে।’’
এ দিকে আমলাদের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস ও বামেরা। বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘আমলাদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। মন্ত্রীদের দেখা নেই। তাঁরা কোথায়?’’ একই প্রশ্ন তুলে বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষের বিপদকে দিল্লি ও রাজ্যের সরকার নিজেদের পৌষ মাস বলে ভাবতে চাইছে। রাজ্যের মন্ত্রীরা কি কোয়রান্টিনে আছেন?’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy