Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকেরাও এখন দুর্দশায়

গ্রামে কাজ ছিল না বলে সন্দেশখালি থানার ধুচনিখালি গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ সরকার স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে কয়েক মাস আগে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। 

নবেন্দু ঘোষ
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৫
Share: Save:

কাজ নেই, কাছে সামান্য যা টাকা ছিল, তাও ফুরিয়ে এসেছে। মুদির দোকানে ধারবাকিতে চাল, ডাল কিনে কোনও মতে আলুসেদ্ধ, ডালসেদ্ধ দিয়ে ভাত খেয়ে দিন কাটছে সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বহু পরিবারের। সকলেই আটকে পড়েছেন ভিনরাজ্যে।

গ্রামে কাজ ছিল না বলে সন্দেশখালি থানার ধুচনিখালি গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ সরকার স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে কয়েক মাস আগে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। বাপ-ব্যাটায় দু’টি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ পেয়ে যান। স্ত্রী অঞ্জনা স্থানীয় একটি আচার তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরছিল একটু একটু করে। কিন্তু গত ক'দিন ধরে কারখানা বন্ধ।

সুভাষ বলেন, ‘‘মুদির দোকানদার বাকিতে চালডাল দিচ্ছেন বলে এখনও দু’মুঠো খেতে পাচ্ছি। কিন্তু উনি বলেছেন, ১০ তারিখের মধ্যে টাকা শোধ করতে হবে। না হলে আর মাল দিতে পারবেন না। কোম্পানি যদি ১০ তারিখের মধ্যে বেতন না দেয়, জানি না কী অবস্থা হবে আমাদের।" সুভাষ আরও বলেন, ‘‘এখন জিনিসপত্রের দাম আগুন। হাতে যে সামান্য কয়েকটা টাকা আছে, তা দিয়েই ক’দিন চলবে জানি না।’’ পরিবারের কর্তা জানান, বাজার থেকে মাঝে মাঝে একটু শাক কিনছেন স্বাদ বদলাতে। না হলে ভাতের সঙ্গে আলু না হলে ডালসিদ্ধই ভরসা। হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ গোবিন্দকাটির বাসিন্দা তাজউদ্দিন গাজি এবং তাঁর জামাই-মেয়েরও একই অবস্থা। তাঁরাও বেঙ্গালুরুতে আটকে। শ্রমিকের কাজ করতেন। লকডাউনের জেরে বেশ কিছু দিন ধরে কাজ বন্ধ তাঁদেরও। তাজউদ্দিনদের হাতে একেবারেই টাকা-পয়সা নেই বলে জানালেন। পাশের একটি মুদির দোকান থেকে চাল-ডাল বাকিতে নিয়ে আপাতত চলছে সংসার। তাজউদ্দিন টেলিফোনে বলেন, ‘‘পেট ভরে খেতে পারছি না। দোকানি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে বেশি মাল নেই। সকলকে অল্প করে দিচ্ছেন।’’ ১০ তারিখের মধ্যে ধার শোধ করতে না পারলে মুদিখানার সুবিধাটুকু আর মিলবে না বলে জানালেন তিনি। বাড়ি ভাড়াও মেটাতে পারছেন না কেউ। তাজউদ্দিন, সুভাষরা জানান, তাঁরা যেখানে আছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকশো শ্রমিক আছেন। সকলেরই কমবেশি একই পরিস্থিতিতে দিন কাটছে। বাড়িতে টাকা পাঠানোও এখন বন্ধ। সমস্যা দু’তরফেই।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE