Advertisement
১০ মে ২০২৪
Cyclone Amphan

শুধু দক্ষিণেই বাড়ি ধ্বংস ১০ লক্ষ: মমতা

শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে আমপানের ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

কাকদ্বীপে মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

কাকদ্বীপে মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

শুভাশিস ঘটক
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

কেন্দ্রীয় দলকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসককে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে আমপানের ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্রিম বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় দল ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে আসবেন। ওই সময় প্রতিটি ক্ষয়ক্ষতির হিসেব তাঁদের সঠিক ভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। সেই কারণে সব দফতরকে একযোগে যৌথ ভাবে ক্ষয়ক্ষতির হিসেবনিকেশ তৈরি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ওই হিসেবে কোনও ফাঁক না থাকে সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।’’ এ দিনের বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে একটি প্রাথমিক হিসেব মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হয়েছিল। ওই হিসেব দেখার পর তিনি বলেন, ‘‘১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কাঁচা বাড়ি কোনও ভাবে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। পাকা বাড়ি আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই হিসেব সংশোধন করার জন্য বৈঠকে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘দুর্যোগ প্রতিরোধে এক লড়াই। পরবর্তী পর্যায়ে পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আর একটি লড়াই। ঝড়ের আগে প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা ঠেকানো গিয়েছে।’’

এ দিনের বৈঠকে প্রশাসনিক কর্তার প্রশংসা করার পরে তিনি বলেন, ‘‘চরম প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে লড়াই করতে হবে। করোনা, লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিক ও দুর্যোগ চারটি প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করতে হবে। তা ছাড়া এখন সরকারের কোনও আয় নেই। মাসিক ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় দু’মাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। করোনার কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান এখনও হাতে আসেনি। তা সত্ত্বেও আমপান দূর্যোগে রাজ্য সরকার ১ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে। প্রতিটি টাকা হিসেব অনুযায়ী খরচ করতে হবে। জেলা পরিষদ ও প্রশাসন এখন কোনও বড় প্রকল্পের কাজে হাতে দেবে না। উন্নয়ন তহবিলের সমস্ত টাকা আমপানের ক্ষতিপূরণে খরচ করতে হবে। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।’’

আরও পড়ুন: শ্রমিকদের সমস্যা আরও ভাল ভাবে মেটানো যেত: নীতি আয়োগ সিইও

দ্রুত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করার জন্য কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যেমে স্থানীয় লোকজনকে কাজে লাগাতে হবে। গাছ কাটা থেকে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার কাজে স্থানীয় মানুষদের শামিল করতে হবে। কারণ, লকডাউন ও করোনা সঙ্কটে প্রতিটি দফতরে মাত্র ২৫ শতাংশ কর্মী রয়েছে। কর্মীর অভাবে মেরামতির কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই কারণে ক্ষতিপূরণের সর্বক্ষেত্রেই স্থানীয় মানুষদের শামিল করতে হবে।’’

তিনি রেশন বিলি নিয়ে বৈঠকে কড়া ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পানীয় জল পাউচ প্যাকের মাধ্যেমে সরবরাহ করতে হবে। তা ছাড়া, সবার কাছে রেশন পৌঁছে দিতে হবে। রেশন বিলি নিয়ে আমি কোনও রকম অভিযোগ বরদাস্ত করব না। কোনও রেশন দোকান যদি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, ওই দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে। সেখান থেকে রেশন সরবরাহ করতে হবে। কোনও মানুষ যাতে রেশন থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’’

বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ-জল নিয়ে নানা জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অনেক বড় বিপর্যয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে। কলকাতা পুরসভার মেয়র ববি হাকিম তিন রাত জেগে রয়েছেন। পুর কমিশনার কাজ করতে পারছিল না। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরাও কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। মোবাইল নেটওর্য়াক পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। আমি ওড়িশা সরকারের কাছে গাছ কাটার জন্য লোক চেয়েছি। ওরা দেবে বলেছে। ফণীর পরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানোর জন্য আমরা ওড়িশায় ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE