সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে অনেক জেলা ভাগ হয়ে গিয়েছে। ফলে চেষ্টা সত্ত্বেও এনআরসি বা নাগরিক পঞ্জিকরণে দাখিল করা নথিপত্র যাচাইয়ের কাজ প্রত্যাশিত গতি পাচ্ছে না।
কয়েকটি জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা ভেঙে নতুন জেলা তৈরি হওয়ায় জায়গামতো বহু নথি পাওয়া যাচ্ছে না। সেগুলি খুঁজে বার করতে গিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারি কর্মীদের। এনআরসি-কর্তৃপক্ষ খুব তাড়া দিচ্ছেন না বলে হাতে সময় নিয়েই চলছে নথি যাচাইয়ের কাজ।
বছরখানেক আগে দার্জিলিং জেলা ভেঙে কালিম্পং করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে বর্ধমান, জলপাইগুড়ি জেলাকেও। পশ্চিম মেদিনীপুর ভেঙে সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম হয়েছে নতুন জেলা। এই ভাঙাভাঙির ধাক্কায় বহু নথিও এক অফিস থেকে অন্য জায়গায় গিয়েছে। আবার সরকারের ঘরে সব নথি বছরের পর বছর রেখে দেওয়ারও ব্যবস্থা নেই। জমি সংক্রান্ত তথ্য চিরকালের জন্য রেখে দেওয়া হলেও কিছু নথি আবার ১২ বছর পর্যন্ত রাখলেই চলে। কিছু আবার বছর দুয়েক সংরক্ষণ করলেই হয়।
জেলা আধিকারিকদের একাংশের দাবি, এই কাজে সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে জমি সংক্রান্ত নথি নিয়ে। জেলা ভাগ হওয়ায় বহু জমির নথি এক জায়গায় চট করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এক জেলায় কোনও নথি না-পেলে নতুন জেলায় ফের তার খোঁজখবর চালাতে হচ্ছে। এই সমস্ত কারণেই এনআরসি-কর্তৃপক্ষের পাঠানো আনুমানিক এক লক্ষ ১৭ হাজারের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি নথি যাচাই করে ফেরত পাঠানো যায়নি।
নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়ায় এক সময় পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা অথবা কর্মরত নাগরিকদের দাখিল করা নথি যাচাইয়ের জন্য ২০১৫ সাল থেকেই পাঠাতে শুরু করেন এনআরসি-কর্তৃপক্ষ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়ায় দাখিল হওয়া নথি যাচাইয়ের জন্য জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ওই সব নথিপত্র মহকুমাশাসক, ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) হয়ে পঞ্চায়েত স্তরের আধিকারিকদের কাছে যায়। সেখানে যাচাইয়ের পরে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় এনআরসি-কর্তৃপক্ষের কাছে। এই পদ্ধতিতে কিছুটা সময় লাগে। তার উপরে বিভিন্ন জেলা ভাগের ফলে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এই মুহূর্তে রাজ্যের অবস্থান হল, নথি যাচাইয়ের কাজ এক বার না-হলে সব দিক থেকে বারবার চেষ্টা করা। কারণ, এর সঙ্গে অসংখ্য নাগরিকের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। ‘‘বিষয়টি এনআরসি-কর্তৃপক্ষও বুঝতে পারছেন,’’ বলেন ওই কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy