পুরনো ছবি এবং নতুন ছবি
তিনি জীবিত না মৃত তা নিয়েই বিতর্ক চলছে সাত দশক ধরে। সেই সুভাষচন্দ্র বসুর ছবির নীচে মৃত্যুর তারিখ লিখে বিতর্কে জড়াল তৃণমূল পরিচালিত এগরা পুরসভা।
সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা পুরসভার একাধিক বাসস্টপে সন্ধ্যা রায়ের সাংসদ তহবিলের টাকায় যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলা হয়েছে। সেই সব প্রতীক্ষালয় সাজানো হয়েছে মনীষীদের ছবি দিয়ে। এগরা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে এগরা-বাজকুল রাজ্য সড়কের উপর যে প্রতীক্ষালয়টি রয়েছে, সেখানেই ছিল সুভাষচন্দ্রের ছবি। নীচে লেখা— জন্ম: ২৩/০১/১৮৯৭, মৃত্যু: ১৮/০৮/১৯৪৫।
এই তথ্য জানাজানি হতেই বিতর্ক বাধে। এগরা শহিদ স্মরণ কমিটির সম্পাদক কিশোরকুমার বসু বলেন, ‘‘যে মৃত্যুদিন নিয়ে রাষ্ট্রীয় ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, তা এ ভাবে লিখে দেওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। বিষয়টি নিন্দনীয়।’’ এগরা শশীভূষণ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দেরও মত, ‘‘কিছু মানুষের দায়িত্বজ্ঞানহীন মানসিকতায় মনীষীদের নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।’’ এগরার মহকুমাশাসক অপ্রতিম ঘোষ বলেন, ‘‘এই পথে অফিস এলেও বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না। তবে এই ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা এমন কাজ করেছেন তাঁরা অজ্ঞ।’’ তিনিই জানাচ্ছেন, সংসদে নেতাজির প্রতিকৃতি-সহ সরকারি কোনও নথিতেই মৃত্যু তারিখ লেখা হয় না বিতর্কের কারণেই। ফব নেতৃত্বের বক্তব্য, মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশন তাইহকু গিয়ে সরকারি বয়ান নিয়ে এসেছিল যে ওই সময় কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। তা ছাড়া নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য সমাধানের দাবি যখন বহাল, তখন বাংলার এক পুরসভায় এমন কাণ্ড অনভিপ্রেত।
এই চাপানউতোরের মধ্যে সোমবার বিকেলে ওই ছবি সরিয়ে সুভাষচন্দ্রের নতুন ছবি লাগানো হয়েছে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে। নতুন ছবির নীচে শুধু জন্মতারিখ রয়েছে। এগরার পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা মানছেন, ‘‘বিতর্কের পরেই নতুন করে নেতাজির ছবি লাগানো হয়েছে। যে সংস্থা এই কাজ করেছিল পুরসভার তরফে তাদের শো-কজ করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় পুরপ্রধান হিসেবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’’ ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ইন্টারনেট ঘেঁটেই সুভাষচন্দ্রের মৃত্যুদিন লিখেছিলেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy