ফিরহাদ হাকিম
নিজেদের প্রকল্পে ছাড়পত্র পেতে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। প্রকল্পের সামনে পরিবেশ সংক্রান্ত বাধা দূর করতে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চিঠি দিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ই এম বাইপাস থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত উড়ালপুল তৈরি করতে চায় রাজ্য। কিন্তু যে-এলাকা দিয়ে ওই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। এতেই আপত্তি পরিবেশবিদদের। তাঁদের যুক্তি, উপর দিয়ে ওই প্রকল্প রূপায়িত হলে জলাভূমির ব্যাপক ক্ষতি হবে। জলাভূমিতে মাছের ক্ষতি হলে ধাক্কা খাবে পরিবেশের ভারসাম্য। প্রকল্পটিকে ঘিরে পরিবেশ মন্ত্রকও আপত্তি তোলে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতেই হর্ষ বর্ধনের সহযোগিতা চেয়েছেন ফিরহাদ। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সিএজি (কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) ওই প্রকল্পের ছাড়পত্র দেওয়ার পরে তা পরিবেশ দফতরে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে প্রকল্পের প্রস্তাব যায় কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকে। সেখানেই সেটি আটকে আছে প্রায় তিন মাস।’’
চিঠিতে পুরমন্ত্রী লিখেছেন, ওই প্রকল্পে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। পরিবেশ বাঁচিয়েই বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে উড়ালপুলের নির্মাণকাজ করা হবে। রাজ্যের যুক্তি, সাত কিলোমিটারের কিছু বেশি দীর্ঘ ওই উড়ালপুলের ৪৭৫৭ মিটার অর্থাৎ সাড়ে চার কিলোমিটারের কিছু বেশি অংশের নির্মাণ হবে জলাভূমি এলাকার উপর দিয়ে। উড়ালপুলের ১৯২টি স্তম্ভ থাকবে ৩৯০০ হেক্টর জলাভূমির মাত্র ০.০০২৮ শতাংশ এলাকায়। ‘ওয়েল পাইলিং’ পদ্ধতিতে ওই নির্মাণকাজ হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিতেই পরিবেশ রক্ষা করে মুম্বইয়ে সমুদ্রের উপর দিয়ে সি-লিঙ্ক রোড তৈরি করা হয়েছিল। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রককে জানিয়েছে, ওই প্রকল্পে বসত বা বাণিজ্যিক বাড়ির তেমন ক্ষতি হবে না। জমি অধিগ্রহণেরও প্রয়োজন নেই। উড়ালপুলটি চালু হলে বিমানবন্দর-নিউ টাউন থেকে ই এম বাইপাস এবং কলকাতা পর্যন্ত বাধাহীন যান চলাচল সম্ভব হবে। সল্টলেক এবং সেক্টর ফাইভের যানজটও এড়ানো যাবে। শহর থেকে নিউ টাউনের বিকল্প পথ খুলে যাবে। শহরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছতে এক বছর আগে উড়ালপুলটির পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উল্টোডাঙা মোড়, কাজী নজরুল ইসলাম সরণি, বাইপাস এবং নিউ টাউনকে এড়িয়ে স্বল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার। ‘মা’ উড়ালপুল থেকে নেমেই প্রস্তাবিত উড়ালপুল শুরু হওয়ার কথা। সেটি ধাপার উপর দিয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy