Advertisement
১০ মে ২০২৪

জল্পনা সত্যি করেই বিজেপিতে প্রাক্তন আইপিএস ভারতী

২০১৩ থেকে ২০১৭— পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী। তার আগে সামলেছেন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপারের দায়িত্ব।

গেরুয়া-যোগ: কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের উপস্থিতিতে রাজনীতিতে হাতেখড়ি ভারতী ঘোষের। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

গেরুয়া-যোগ: কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের উপস্থিতিতে রাজনীতিতে হাতেখড়ি ভারতী ঘোষের। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

অপ্রত্যাশিত নয়। বরং দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা ছিল, গেরুয়া আশ্রয়ে আত্মগোপন করে রয়েছেন তিনি। সেই ইঙ্গিত সত্যি করেই প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেন বিজেপিতে। সোমবার কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াদের উপস্থিতিতে দিল্লিতে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় তাঁর।

২০১৩ থেকে ২০১৭— পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী। তার আগে সামলেছেন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপারের দায়িত্ব। গোটা পর্বেই জঙ্গলমহলে ভারতীর আধিপত্য এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিঁধেছে বিরোধীরা। সরকারি মঞ্চে একাধিকবার মমতাকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে সম্বোধন করে বিতর্কে জড়িয়েছেন ভারতী। ভোটের সময় তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।

গত কয়েক মাসে দ্রুত ছবিটা বদলায়। জেলা পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ভারতীকে। সোনা-প্রতারণায় নাম জড়ায় তাঁর। গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্বামীকে। ভারতীকে গ্রেফতারের জন্যও ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় সিআইডি। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে গ্রেফতারি এড়িয়েছেন ভারতী।

তবে কি মামলা থেকে বাঁচতেই বিজেপিতে এলেন? ভারতীর জবাব, ‘‘আমি বাঁচব কি মরব, তা সুপ্রিম কোর্টের হাতে, কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে নয়। মনে রাখবেন, যে-ই চাকরি ছাড়লাম, তখনই চোর-জোচ্চোর-বদমাশ বলা হল। যে যে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন, তাঁদের পুরো নাম সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছি।’’ কেন তিনি একসময় মমতাকে জঙ্গলমহলের ‘মা’ বলেছিলেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভারতী। তাঁর কথায়, ‘‘তখন তাঁর (মমতার) বিরোধী চরিত্র ছিল। সকলে ভেবেছিলেন তিনি পরিবর্তন আনবেন। কিন্তু পরে বিরোধী স্বর বন্ধ করা হয়েছে।’’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভারতী প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজ জেলার কালো দিন। সোনা চোর, বালি চোর বিজেপিতে যাবে, এটাই তো প্রত্যাশিত!’’

বস্তুত, বিজেপি যখন ভুয়ো অর্থ লগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারি নিয়ে মমতার বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন, তখন বিজেপির মুকুল রায়, হিমন্তবিশ্ব শর্মার মতো নেতাদের নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। প্রশান্ত ভূষণের মতো নেতা মুকুল ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের কথোপকথনের একটি টেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেখানে সিবিআইকে প্রভাব খাটানোর কথা বলা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা কাউকে বাঁচানোর পক্ষে নই। মুকুল রায়কেও তো জেরা করা হয়েছে। কিন্তু এই রাজীব কুমারে এমন কী আছে, যে মুখ্যমন্ত্রীকে ধর্নায় বসতে হল!’’ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এই ধর্নার উদ্দেশ্য রাজীব কুমারকে বাঁচানো নয়। দেশকে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে, সংবিধানকে এবং পুলিশ বাহিনী-সহ সব সরকারি অফিসারদের বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতেই এই আন্দোলন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bharati Ghosh BJP TMC Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE