ফের আক্রমণাত্মক রাজ্যপাল। —ফাইল চিত্র।
কার্নিভাল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন আগেই। এ বার রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সঙ্গে ফের প্রকাশ্য সঙ্ঘাতের রাস্তায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা বাক্-স্বাধীনতার অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তুললেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘না জেনে মন্তব্য করছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
কেন্দ্রীয় সরকারকে নিরাপত্তা বাড়ানোর আর্জি জানানোয়, সম্প্রতি জগদীপ ধনখড়কে কটাক্ষ করেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যকে ‘ওভারটেক’ করে রাজ্যপাল কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। গত ৫০ বছরে আর কোনও রাজ্যপালকে নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন বলে বলতে শোনেননি— এমন মন্তব্যও করেন সুব্রত।
এই মন্তব্য নিয়ে শুক্রবার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল ধনখড়। এ দিন তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে যান। সেখান থেকে বেরোনোর পর, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘আমার নিরাপত্তা নিয়ে না জেনে মন্তব্য করেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এক জন মন্ত্রী হয়ে তিনি কী ভাবে এমন মন্তব্য করতে পারলেন?’’
আরও পড়ুন: শঙ্খ ঘোষদের ডি-লিট দেবে যাদবপুর, প্রথমে আপত্তি জানিয়েও পরে মেনে নিলেন আচার্য
এর আগে, রেড রোডে দুর্গা প্রতিমার কার্নিভাল অনুষ্ঠান নিয়েও খোলাখুলি অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁকে যেখানে বসতে দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে কিছু দেখতে পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর সেই দাবি উড়িয়ে দেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কিছু বললেই কি তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে হবে? উনি বলছেন, ওঁকে বলতে দিন। এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে!’’ রাজ্যের আর এক মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, ‘‘উনি এক জন প্রচার সর্বস্ব রাজ্যপাল। প্রচারে থাকার জন্যই এই সব কথা বলছেন।’’
নাম না করে এ দিন তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করি না। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের মুখে এই ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেউ কেউ আমাকে পর্যটক বলছেন। প্রশাসনিক প্রধান কী ভাবে পর্যটক হতে পারেন? সাংবিধানিক কর্তব্য পালন করতে বাধ্য আমি। তাই মানুষের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। কার্নিভালে যে অব্যবস্থা দেখেছি, অনুষ্ঠান চলাকালীনই সেই নিয়ে সরব হয়েছি। অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরনোর পথেও অসুবিধার কথা জানিয়েছি।’’
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে শিলিগুড়িতে বিশেষ প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিরা তাতে অংশ নিলেও, শাসকদলের মন্ত্রী, আমলা এবং পুলিশ কর্তারা বৈঠক এড়িয়ে যান। সে প্রসঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘আমার ডাকা বৈঠকে কেউ এল না। এই উপেক্ষা একেবারেই কাম্য নয়। সংবাদমাধ্যম কি একে সমর্থন করে?’
আরও পড়ুন: কাছ থেকে পর পর গুলি! নিজের অফিসেই খুন হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন নেতা
ধনখড়ের পূর্বসুরি কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে একসময় রাজ্য সরকারের গোলমাল তুঙ্গে উঠেছিল। নয়া রাজ্যপাল আসার পর, প্রথম দিকে পরিস্থিতি খানিকটা পাল্টেছিল। সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সদ্ভাব রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে ঘেরাওয়ের ঘটনার পর থেকেই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নিয়েও সরব হন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy