নদিয়ার তাহেরপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বিজেপি সমর্থকেরা। ট্রেনের ধাক্কায় তাঁদের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালেই মৃত বিজেপি সমর্থকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে নির্দেশ দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে স্থানীয় নেতারা মুর্শিদাবাদে গিয়েছেন।
শনিবার তাহেরপুরে প্রথমে প্রশাসনিক এবং পরে একটি রাজনৈতিক জনসভা করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সেই উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে বিজেপি সমর্থকেরা নদিয়ায় আসেন। মুর্শিদাবাদ থেকে একটি বাস ভাড়া করে এসেছিলেন অন্তত ৪০ জন। সকাল সকাল তাহেরপুর পৌঁছে যান তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁদেরই কয়েক জন তাহেরপুর স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনে প্রাতঃকৃত্য সারছিলেন। কুয়াশার কারণে ট্রেনের গতিবিধি তাঁরা বুঝতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন জনের। দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন:
বিজেপি সমর্থকদের মৃত্যুর খবর পেয়েই তৎপর হয় তৃণমূল। অভিষেকের দফতর থেকে নদিয়ায় নির্দেশ যায়, অবিলম্বে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবে। দলনেতার নির্দেশ পেয়েই স্থানীয় তৃণমূল নেতারা মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা হন। বড়ঞায় পৌঁছে তাঁরা মৃত তিন জনের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন, সমবেদনা জানান। রাজ্যের শাসকদলের তরফে দেওয়া হয়েছে সাহায্যের আশ্বাসও। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে (ডেভিড) ফোন করে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু ডেভিড জেলার বাইরে ছিলেন। তিনি বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি মাহে আলম-সহ বাকিদের পাঠিয়ে দেন। নিজে পরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
মুর্শিদাবাদে নিহত বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি সমর্থকদের মৃত্যুতে তৃণমূলের এই তৎপরতাকে অভিষেকের কৌশলী রাজনৈতিক চাল হিসাবে দেখছেন অনেকে। রাজ্য বিজেপি আপাতত প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে ব্যস্ত। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের দাবি, মৃত বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে বিজেপি পৌঁছোনোর আগেই পৌঁছে গিয়েছে তারা। বরং বিজেপি ওই পরিবারগুলিকে অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রীর সভায় যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ওই চার জনের মৃত্যু হওয়ায় বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। যদিও মৃতদের পরিবারের দাবি, বিজেপির তরফেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মিলেছে সাহায্যের আশ্বাস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গোপীনাথ দাস (৫২), মুক্তিপদ সূত্রধর (৫৬) এবং রামপ্রসাদ ঘোষ (৫৫)। তাঁরা মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বাসিন্দা।
কুয়াশার কারণে তাহেরপুরে শনিবার নামতেই পারেনি মোদীর বিমান। ফলে তাঁর সফরের পূর্বনির্ধারিত সূচিতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। দমদম বিমানবন্দর থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাহেরপুরের জনসভায় ভাষণ দেন মোদী।