Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Haldia Murder Case

মায়ের সঙ্গে সাদ্দামের সম্পর্ক! সন্দেহ করেছিল রিয়া

রিয়া দে এবং রমা দে নামে দুই মহিলাকে খুন করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত শেখ সাদ্দামকে গ্রেফতার করেছে।

রিয়া ও রমার সঙ্গে সাদ্দাম।

রিয়া ও রমার সঙ্গে সাদ্দাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১১
Share: Save:

মেয়ে সন্দেহ করতে শুরু করেছিল মায়ের সঙ্গে ‘প্রেমিকে’র সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আবার, ‘প্রেমিকে’র মনে সন্দেহ জেগেছিল, মা-মেয়ের অন্য কোনও পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে!

হুগলির তীরে হলদিয়ায় জোড়া অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের হাতে এসেছে মৃত রিয়া দে’র একটি ডায়েরি। তাতে উঠে আসছে সম্পর্কের টানাপড়েনের এমন একাধিক তথ্য।

রিয়া দে এবং রমা দে নামে দুই মহিলাকে খুন করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত শেখ সাদ্দামকে গ্রেফতার করেছে। আদতে দুর্গাচকের নিউ কলোনির বাসিন্দা সাদ্দাম বাসুদেবপুরের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। সেই বাড়িতে বৃহস্পতিবার গিয়েছিল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা রিয়ার ডায়েরি, স্কুলের খাতা উদ্ধার করেছে। ডায়েরি থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত রিয়া। সে বাংলা মাধ্যমের ছাত্রী হলেও ইংরেজি, হিন্দিতে সাবলীল ছিল। তার ডায়রিতে তিনটি ভাষাতেই আবেগপূর্ণ কথাবার্তা লেখা রয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, রিয়ার ডায়েরিতে সাদ্দামের প্রতি তার ভালবাসার কথা লেখা রয়েছে। কিন্তু ‘প্রেমিক’ সাদ্দামের সঙ্গে নিজের মা রমার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল রিয়ার মনে। পাশাপাশি, রিয়া এবং রমা অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছে বলে সন্দেহ করতে শুরু করেছিল সাদ্দাম।

রিয়া-রমাকে খুনের অভিযোগে পুলিশ সাদ্দাম এবং শেখ মনজুর আলম মল্লিক নামে আগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় শুকদেব দাস নামে আরও একজনকে। এদিন তাকে হলদিয়া আদালতে তোলে পুলিশ। তার ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ জানাচ্ছে, শুকদেব, সাদ্দাম, মনজুর দীর্ঘদিনের বন্ধু। মনজুরের বাড়ি হলদিয়ার ঝিকুরখালিতে। ওই এলাকাতেই নদীর পাড়ে পাওয়া গিয়েছিল রিয়া এবং রমার অর্ধদগ্ধ দেহ। শুকদেবকে জেরা করে ওই জোড়া-হত্যাকাণ্ডে আরও কিছু তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। তাদের দাবি, রিয়া এবং রমাকে খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে শুকদেব। খুনের প্রমাণ লোপাটে সে সাহায্য করেছিল। জেরায় শুকদেব পুলিশকে জানিয়েছে, মা-মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মারার পরে তারা রমাকে কম্বলে মুড়ে গাড়ির ডিকিতে রেখে দেয়। রিয়াকে একটি ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে গাড়ির পিছনের সিটে রাখে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাসুদেবপুরের ভাড়াবাড়ি থেকে সাদ্দাম নিজেই গাড়ি চালিয়ে ঝিকুরখালিতে হুগলির তীরে যায়। শুকদেব পেশায় ভারী গাড়ির চালক হলেও সেদিন সে গাড়ি চালায়নি। প্রথমে মনজুরের বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে দেহ লোপাট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু মনজুর জানিয়েছিল যে, তার এলাকায় সিসিটিভি রয়েছে। সেই জন্য পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে হুগলির পাড়ে পেট্রোল ঢেলে দুটি দেহতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পরই মেচেদার একটি ধাবাতে পালিয়ে যায় শুকদেব। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে পাকড়াও করে পুলিশ।

এদিকে, এদিন রিয়ার মামাবাড়ির আত্মীয়েরা এসে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য হলদিয়া মহকুমা আদালতে রক্তের নমুনা দেন। তা কলকাতার একটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Haldia Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE