আয়োজন: বসন্ত উৎসবের সূচনায় ‘সুন্দর’ নাট্যগীতি। বুধবার আশ্রম মাঠে। —নিজস্ব চিত্র
আশ্রমমাঠে নাট্যগীতি ‘সুন্দর’ পরিবেশনের মধ্যে দিয়েই বসন্ত উৎসবের সূচনা হল বিশ্বভারতীতে। বুধবার সন্ধেয়। এর পরে রাত ন’টায় গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিক হয়।
প্রথম বার শান্তিনিকেতনে ‘সুন্দর’ পরিবেশিত হওয়ায় খুশি আশ্রমিকেরা। গত বছর বসন্তোৎসবেও প্রায় ৪২ বছর পরে ‘নবীন’ পালা পরিবেশিত হয়েছিল উৎসবের আগের রাতে। বৃহস্পতিবার ‘নবীন’ পালারই গান ‘ওরে গৃহবাসী খোল্ দ্বার খোল্ লাগল যে দোল’ দিয়ে শুরু হবে শান্তিনিকেতন বসন্তোৎসব। থাকবে পড়ুয়াদের শোভাযাত্রা।
প্রবেশ পথ
পর্যটকদের আশ্রমমাঠে যেতে হলে নেপাল গেট, শান্তিনিকেতন প্রথম গেট এবং অরশ্রী মার্কেট গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। বিশ্বভারতীর কর্মী, পড়ুয়া এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের উত্তরায়ণের সামনের গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথিরা সঙ্গীতভবন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।
পার্কিং
সাধারণ দর্শনার্থীরা তাঁদের যানবাহন পৌষমেলার মাঠ, রতনপল্লি মাঠ, বিনয়ভবন আমবাগান এলাকায় রাখতে পারবেন। বিশ্বভারতীর কর্মী, পড়ুয়া এবং অংশগ্রহণকারীদের দু’চাকার যান উত্তরায়ণের পূর্ব দিকে, উত্তরায়ণের সাইকেল স্ট্যান্ডে, নাট্যঘরের পশ্চিমদিকে এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা যাবে। চারচাকা যান তাঁরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়, পুরনো সুইমিং পুল, রতনপল্লি মাঠ এবং চাতক পার্কিং এলাকায় রাখতে পারবেন।
আশ্রমমাঠে বসার জায়গা
মঞ্চের একপাশে থাকছে গ্রিনরুম, অন্য পাশে বিশ্বভারতীর ছোট ক্লাসের পড়ুয়াদের বসার জায়গা। তাদের পাশের প্লটে বড় ক্লাসের পড়ুয়ারা বসবেন। মঞ্চের সামনের একটা অংশ পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা বসবেন। আর একটা অংশে থাকছে আমন্ত্রিত অতিথিদের বসার জায়গা। তাঁদের পিছনে থাকছে সংবাদমাধ্যম। এর পরের অংশে আশ্রমিক ও কর্মীদের বসার জায়গা। আশ্রমমাঠের বাকি অংশ থাকছে পর্যটকদের জন্য।
যান নিয়ন্ত্রণ
পৌষমেলার মতোই বসন্তোৎসবেও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে বীরভূম জেলা পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার শহরের ভিতর দিয়ে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। শহরের ভিতর দিয়ে কোনও মোটরচালিত ভ্যানও যাতায়াত করবে না। শান্তিনিকেতন রোডে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে চৌরাস্তা থেকে লজ মোড় পর্যন্ত। গোয়ালপাড়া এবং প্রান্তিকের দিক থেকে আসা চারচাকা গাড়িগুলি রতনপল্লি মাঠে পার্কিং করতে হবে। দু’চাকা বা চারচাকা যে কোনও গাড়িই রাস্তার ধারে রাখলে বাজেয়াপ্ত করা হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে জেলা পুলিশ এবং প্রশাসন সহায়তা করছে বিশ্বভারতীকে। ড্রোনের ব্যবস্থা থাকছে। সমগ্র এলাকা মিলে প্রায় ১৫০০ জন পুলিশ থাকছেন। এর মধ্যেই মহিলা পুলিশ এবং সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও থাকবেন। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের পাশে থাকছে প্রিজন ভ্যান। কোথাও কোনও বিশৃঙ্খলা দেখলেই সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হবে বিশৃঙ্খলাকারীকে। বিশ্বভারতীর স্থায়ী নিরাপত্তারক্ষীদের পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক পুরুষ ও মহিলা নিরাপত্তারক্ষীরাও থাকছেন। থাকছে ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার ফোর্স। এ ছাড়াও বিশ্বভারতীর এনএসএস ইউনিট এবং এনসিসির পড়ুয়ারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকছেন।
জল এবং শৌচালয়
বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জলের ব্যবস্থা করা হলেও পর্যটক বা স্থানীয়দের সকলকেই সঙ্গে জলের বোতল রাখার আর্জি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। উৎসব মাঠে থাকছে জলের পাউচ, পুরসভার ট্যাঙ্ক। জলের বোতল কিনতেও পারবেন পর্যটকেরা। আশ্রমমাঠের পশ্চিম এবং দক্ষিণদিকে অস্থায়ী শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও পৌষমেলার মাঠে, পুরনো সুইমিং পুলের কাছে, হাতিপুকুরের পাশে এবং নাট্যঘরের পিছনে শৌচালয় থাকছে। বসন্তোৎসব সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে বদ্ধপরিকর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পর্যটক এবং স্থানীয়দেরও এই উদ্যোগে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy