বাম আমলেই এ রাজ্যে জমি পেয়েছে ইনফোসিস। কিন্তু ওই জমিতে তাদের বিনিয়োগ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) সুবিধা পাবে কিনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় সেই তর্কেই থমকে রয়েছে প্রকল্পের অগ্রগতি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হঠাৎই বিধানসভায় ঘোষণা করে দিলেন, ‘‘কিছুদিনের মধ্যেই ইনফোসিসের বিনিয়োগ আসছে বাংলায়। রাজারহাটের জমির দাম মিটিয়ে দিয়েছে ওরা। ইনফোসিসের সঙ্গে কথা হচ্ছে।’’
বিধানসভায় এ দিন পুর আইন সংক্রান্ত একটি সংশোধনী বিল পাশ হয়। সেই সূত্রেই ইনফোসিসের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন পুরমন্ত্রী। তবে কোন শর্তে ইনফোসিসের প্রকল্পে ‘অগ্রগতি হচ্ছে’ তা ব্যাখ্যা করেননি ফিরহাদ। এমনকী বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও এর কোনও সদুত্তর দেননি। শুধু বলেন, ‘‘আমি পুরমন্ত্রী। জমি বেচা আমার দফতরের কাজ। আমি জমি বেচেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’’ তা ছাড়া এ-ও জানিয়ে দেন, বিনিয়োগ, শর্তাদির ব্যাপারে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীই বিশদে জানাতে পারবেন।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, পুরমন্ত্রী এ দিন যখন ইনফোসিসের প্রসঙ্গ বিধানসভায় তোলেন তখন সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি তখন কোনও মন্তব্য করেননি। এমনকী পরে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কিছু জানেন না।
কিন্তু এর পরেও পুরমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘হিডকো এলাকায় ৫০ একর জমি নিয়েছিল ইনফোসিস। দু’দফায় জমির দাম বাবদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা মেটানোর কথা ছিল। প্রথম দফার টাকা আগেই মিটিয়েছিল। কিছু দিন আগে বাকি টাকাও মিটিয়ে দিয়েছে। জমিতে পাঁচিল দেওয়ার কাজ চলছে।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এর থেকেই কি আপনি ধরে নিচ্ছেন বিনিয়োগের ব্যাপারে অগ্রগতি হচ্ছে? জবাবে ফিরহাদ বলেন, ‘‘কেউ তো আর ঘাস উৎপাদন করে গরুকে খাওয়ানোর জন্য এত দাম দিয়ে জমি কেনেনি!’’
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বার তৃণমূল সরকার গঠনের পর থেকেই ইনফোসিসের বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে শিল্প ও সরকারি মহলে নানারকম আলোচনা শুরু হয়েছিল। শাসক দলের একটি সূত্র দাবি করছিল, সেজ তকমা না দিয়েও কী ভাবে ইনফোসিসের বিনিয়োগ টানা যায় সেই চেষ্টা হচ্ছে। তবে বাস্তবে সেই চেষ্টার বিশেষ কোনও প্রতিফলন গত ছ’মাসে নজরে পড়েনি। পুরমন্ত্রীর মন্তব্য স্বাভাবিক ভাবেই তাই জল্পনা বাড়িয়ে তুলেছে।
ইনফোসিসের পাশাপাশি অন্য তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বিনিয়োগ নিয়েও এ দিন সম্ভাবনার কথা বলেছেন পুরমন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন,‘‘এ রাজ্যে কগনিজেন্টের তিনটে ক্যাম্পাস রয়েছে। রাজারহাটে আরও একটি ক্যাম্পাসের জন্য কগনিজেন্ট জমি চেয়েছে। রাজারহাটে টিসিএসের সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস তৈরির কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। একসঙ্গে ৪০ হাজার লোক বসে কাজ করতে পারবে টিসিএসের ওই ক্যাম্পাসে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy