প্রায় এক যুগের টানাপড়েনে ইতি টেনে ইনফোসিস অবশেষে রাজ্যে লগ্নি করতে আসছে বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (সেজ) তকমা ছাড়াই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি রাজারহাটে ক্যাম্পাস তৈরি করতে রাজি হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন সংস্থার অন্যতম কর্তা রামনাথ কামাথ।
২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে কলকাতায় এসে রাজ্যে ৫০০ কোটি টাকা লগ্নি করে নতুন ক্যাম্পাস খোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইনফোসিসের প্রাণপুরুষ নারায়ণমূর্তি। বলেছিলেন, এর ফলে কর্মসংস্থান হবে ৫০০০ জনের। গোড়ায় ১০০ একর জমি নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে ৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ৫০ একর জমি নেয় তারা। কিন্তু তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেজ তকমা দেওয়া নিয়েই শুরু হয় টানাপড়েন। মমতার সরকার নীতিগত ভাবে সেজ গড়ার বিরোধী। বিনিময়ে সমতুল সুবিধা দিতে তারা রাজি।
অন্য দিকে সংস্থার বক্তব্য ছিল, সেজ-এর সমান সুযোগসুবিধা রাজ্যের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেই ক্ষমতাই তাদের নেই। কর্পোরেট কর, আমদানি শুল্ক, পরিষেবা কর, উৎপাদন শুল্ক, কেন্দ্রীয় বিক্রয় করে ছাড়ই সেজ-এ ব্যবসা করার প্রধান আকর্ষণ। আর সেই সব সুবিধা ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব।
আরও পড়ুন: বন্ধ তুলছি না, হুঙ্কার গুরুঙ্গের
শেষ পর্যন্ত ২০১১-র এপ্রিলে ইনফোসিস জানিয়ে দেন, কলকাতার প্রকল্প আপাতত স্থগিত রাখছে তারা। তার পরেও প্রকল্প বাঁচাতে ইনফোসিসের সঙ্গে দৌত্য করেছিলেন তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বরফ গলেনি।
মমতা অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘সেজ দেওয়া হবে না। অন্য সব সুবিধা দেবে রাজ্য। ইনফোসিস জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যতম সেরা শিল্পবান্ধব রাজ্য। প্রাথমিক ভাবে ৫০ একর জমিতে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।’’ যদিও ইনফোসিসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া এ দিন রাত পর্যন্ত জানানো হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ইনসেনটিভ প্রকল্পে যে সব সুবিধা রয়েছে, তা ইনফোসিস পাবে। নবান্ন সূত্রের খবর, প্রকল্পটি কয়েকটি পর্বে ভাগ করে তৈরি হবে।
অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে ইনফোসিস সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিশাল সিক্কার জায়গায় অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নন্দন নিলেকানির হাতে সংস্থার রাশ আসার ফলেও এই অবস্থান বদল হতে পারে। কারণ, নিলেকানির সঙ্গে নারায়ণমূর্তির সম্পর্ক খুবই ভাল। এবং এ রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছিলেন নারায়ণমূর্তিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy