এক লেনের ৩২ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে তিন-তিনটি টোল প্লাজা। গোটা পথ সুনসান হলেও যানজটে জেরবার হতে হয় টোলের লাইনে। রাস্তার দু’ধার মাত্রাতিরিক্ত নিচু ফলে ছোট গাড়ি কোনও কারণে নিয়ন্ত্রণ হারালে উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুনসান এক্সপ্রেসওয়েতে প্রচুর বাঁক। অন্ধকারে বাঁকগুলোই বিপজ্জনক হয় বেশি। বছর খানেক আগেই কেএমডিএ-র হাত থেকে রাজ্য সরকারের স্টেট হাইওয়ে অথরিটির হাতে এসেছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। স্টেট হাইওয়ে অথরিটি স্থানীয় একটি ঠিকাদার সংস্থাকে বছরে ১০ কোটি টাকা আদায়ের চুক্তিতে টোল প্লাজা চালানোর বরাত দিয়েছে। কিন্তু দফতর বদলালেও টোল আদায়ের পরিকাঠামো বদলায়নি। পুরনো টোল কর্মীদের অনেকে নতুন ঠিকাদারের অধীনে কাজ শুরু করলেও টোল আদায় হচ্ছে অনেকটাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলার মতো করে। এক্সপ্রেসওয়ের মাঝে সোদপুর মুড়াগাছা, ব্যারাকপুর কুণ্ডুবাড়ি ও কাঁচরাপাড়া কাঁপা মোড়ের কাছে নীল-সাদা রং করা পুরনো গুমটিগুলোতে গত ডিসেম্বর থেকে ফের টোল প্লাজা চালু হলেও অভিযোগ জমছিল টোল আদায়ের ধরন নিয়ে। রাস্তায় যান পরিষেবা উন্নত হওয়ার বদলে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি থামিয়ে হাত বাড়িয়ে টোল আদায়ের এই প্রক্রিয়া নিয়ে গাড়িচালকদের সঙ্গেও টোল কর্মীদের বচসা নিত্য ঘটনা। যানজট এড়াতে রসিদ ছাড়াই নির্ধারিত টাকার চেয়ে কম টাকায় টোল পেরোতে দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল। যানজট কমার বদলে বাড়ছিল সিঙ্গল লেনের এই এক্সপ্রেসওয়েতে। টোলের সমস্যা নিয়ে অনেক যাত্রী অভিযোগ জানান, প্রশাসনিক কর্তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পুলিশের হেল্পলাইনে। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরেই প্রশাসনিক বৈঠকে টোল সমস্যা সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, টোল আদায়ের ধরন বদলাতে হবে। একটি কাউন্টার থেকে নাগাড়ে এত গাড়ির টোল আদায়ের এই ব্যবস্থা বদলানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র। বৃহস্পতিবার পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘অনিয়মগুলি নিয়ে জেলাশাসক ও সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। টোল প্লাজার জন্য ছোট ও বড় গাড়ির আলাদা লেন হওয়া উচিত। এর মধ্যে ভিআইপি ও জরুরি পরিষেবার গাড়ির জন্যও একটি লেন নির্দিষ্ট থাকবে। টোলের কর্মীদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের তরফ থেকে নজরদারি রাখা হবে। আমরাও কিছু ডিসপ্লে বোর্ড বসাব।’’ তিনটি টোল প্লাজার কাছেই পুলিশ চৌকি করারও পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কমিশনার। দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তার দু’ধারে গোটা পথেই যাতে রিফ্লেক্টর বসানো যায়, তারও সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বৈঠকে। বাঁকগুলোর আগেও রিফ্লেক্টর লাগানো বাঁকের চিহ্ন দেওয়া বোর্ড বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে।
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামীও বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই টোল নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর প্রক্রিয়াগত ভুল আছে। তা সংশোধনে আলোচনা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy