Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
ব্যাটেলিয়ন বদলে যায়

ওঠানামা করে সীমান্ত-ভাগ্য

কিছু দিন আগে সেই ব্যাটেলিয়ন বদলের সঙ্গেই কাকমারি সীমান্ত এলাকার চেহারাটাও বদলে গিয়েছিল। বিএসএফ ক্যাম্পে মাছ ধরা বা চাষের কাজে যাওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে গেলেই মিলত কড়া ধমক।

শেষ শ্রদ্ধার ছবিটি বিএসএফের সৌজন্যে প্রাপ্ত।

শেষ শ্রদ্ধার ছবিটি বিএসএফের সৌজন্যে প্রাপ্ত।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
 জলঙ্গি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০১
Share: Save:

দিন বদলায়, ব্যটেলিয়নও। সীমান্তে ব্যাটেলিয়ন বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় আশপাশের গাঁ-গঞ্জের রোজনামচা। কখনও সেই বদলের সঙ্গে হাসি ফোটে গ্রামবাসীদের মুখে, কখনও নতুন ব্যাটেলিয়নের আচরণে বিরক্ত হয়ে ত্রস্ত দিনযাপন শুরু হয় তাঁদের।

কিছু দিন আগে সেই ব্যাটেলিয়ন বদলের সঙ্গেই কাকমারি সীমান্ত এলাকার চেহারাটাও বদলে গিয়েছিল। বিএসএফ ক্যাম্পে মাছ ধরা বা চাষের কাজে যাওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে গেলেই মিলত কড়া ধমক। সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেকের বিএসএফ ক্যাম্প সাফসুতরো করার নির্দেশ। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এর আগেও অনেক ব্যাটেলিয়ন এসেছে। তারাও প্রথমে এসে একটু কড়াকড়ি করেছে বটে, কিন্তু এমন আচরণ আগে কখনও দেখেনি কাকমারি।

যদিও স্থানীয় মানুষের এই দাবি মানতে নারাজ বিএসএফের কর্তারা। তাঁদের দাবি, একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ। আদতে পাচারের সুবিধা না পেলেই বিএসএফের ওপরে রুষ্ট হয়ে ওঠে গ্রামবাসীদের একাংশ। তা হলে কি আগে সীমান্ত ছিল অনেক খোলামেলা? উত্তর মেলেনি। তবে, কাকমারির এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘এলাকার কিছু মানুষ পাচারের সঙ্গে যুক্ত, সব সীমান্তেই এই চরিত্রেরা থাকে। তবে একটা সময়ের পরে তারাই বিএসএফের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে ফেলে। আর ভুগতে হয় সাধারণ চাষি ও মৎস্যজীবীদের। যত জুলুম সাধারণ আটপৌরে ওই মানুষগুলির উপরেই।’’

সীমান্তে চাষ বা মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের হাতে নানা ভাবে হয়রানি হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও রানিনগর এবং জলঙ্গিতে অনেক বারই বিক্ষোভ হয়েছে, পথ অবরোধ হয়েছে সেই ঘটনাকে ঘিরে। কখনও ব্যাটেলিয়নের বদল হয়ে সমস্যা মিটেছে আবার কখনও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছু দিনের জন্য সমস্যার সমাধান হয়েছে।

রানিনগর সীমান্তের বাসিন্দা জালালুদ্দিন মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমরা যারা দীর্ঘ দিন সীমান্ত এলাকায় বসবাস করছি তাদের কাছে বিএসএফের এই অত্যাচার এখন প্রায় গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।’’

সীমান্ত এলাকায় পাট চাষ এখন প্রায় বন্ধ। গরু কিংবা গাড়ি নিয়ে যেতে গেলেও হাজারও কৈফিয়ৎ দিতে হয় চাষিদের। আর ঠিক যে সময়ে পদ্মায় মাছের আনাগোনা বাড়ে, ঠিক সেই সময়ই পদ্মায় ভাসা বারণ হয়ে যায় মৎস্যজীবীদের। ফলে দিনের আলো থাকতে থাকতেই মাছ ধরে ফিরতে হয় তাঁদের। রানিনগর সীমান্তের মৎস্যজীবী পিন্টু মণ্ডল বলছেন, ‘‘একে কাপড়া জলের খেসারত দিচ্ছি আমরা। তার উপরে বিএসএফের ফতোয়া। এখন সেই সঙ্গে জুড়ল দু’দেশের জলসীমা নিয়ে সমস্যা।’’

মৎস্যজীবীদের কথায়, ‘‘ডাঙায় বিএসএফ আর জলে বিজিবি, আমরা এ বার যাই কোথায় বলুন তো!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BSF Last Tribute BGB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE