তিন দশকের প্রথায় প্রথম ছেদ পড়ছে এ বারই। কড়িধ্যার রামনবমী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিয়ম মেনে মিছিল হবে। কিন্তু, থাকবে না অস্ত্রের ঝন্ঝনানি।
বীরভূমের জেলা সদর সিউড়ি-ঘেঁষা প্রাচীন এই জনপদে ১৯৮৯ সালে করসেবার শুরু থেকে সশস্ত্র মিছিল হচ্ছে। তা হলে কেন ব্যতিক্রম? এর কারণ, কড়িধ্যার কাছে পাথরচাপুড়ির দাতাবাবার মেলা। বীরভূমের ওই প্রাচীন মেলায় লক্ষাধিক জনসমাগম হয়। মেলা শুরু হচ্ছে আজ, শনিবার। রামনবমীর মিছিল রবিবার। জেলা প্রশাসন কড়িধ্যার রামনবমীর আয়োজকদের কাছে এ বার অস্ত্র নিয়ে মিছিল না করার অনুরোধ করেন। তাতে সায় দেয় কড়িধ্যা।
দু’দিন আগেই জেলা সফরে বোলপুরে এসে রামনবমী নিয়ে পুলিশ, প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরম্পরাগত ভাবে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে না, এমন সংগঠনকে সশস্ত্র মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কড়িধ্যার আয়োজকেরা অস্ত্র নিয়ে মিছিল করলে প্রশাসনের খুব একটা কিছু করার ছিল না। কারণ তিন দশক ধরে সেটাই তাঁদের প্রথা। কিন্তু, তাঁরা নিরস্ত্র মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমাদের সমস্যা অনেকটাই মিটল।’’ ওই মিছিলের উদ্যোক্তা, জেলা বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল এবং দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের দাবি, ‘‘দাতাবাবার মেলা শুরু হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।’’
এই নজির অবশ্য গত বছর রেখেছে সিউড়িরই সব ক’টি মহরম কমিটি। দুর্গাপুজোর বিসর্জন ও মহরম এক দিনে পড়েছিল। সম্প্রীতি বজায় রাখতে অস্ত্র ছাড়াই মিছিল করেছিল মহরম কমিটিগুলি।
কড়িধ্যার এই সিদ্ধান্তের পিছনে ‘অন্য কারণ’ও রয়েছে বলে জেলা বিজেপি সূত্রের খবর। জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘গত বছর কড়িধ্যার মিছিলে হামলা নিয়েই ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ বার আবার পঞ্চায়েত ভোট।
তাই ঝুঁকি না নেওয়াটাই ভাল।’’ বীরভূমে এ বারই প্রথম রামনবমী পালন করতে চলেছে তৃণমূলও। রামপুরহাট, নলহাটি, বোলপুর, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর— প্রতিটি জায়গাতেই চলছে মিছিল, পাল্টা মিছিল। সেই আবহে জেলার পুলিশ-প্রশাসনকে স্বস্তিতে রাখল কড়িধ্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy