অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং সোমেন মিত্র।
অসমে গণহত্যার প্রতিবাদে শনিবার বাংলা জুড়ে ‘কালা দিবস’ পালনে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের নির্দেশে জেলায় জেলায় মিছিল করল কংগ্রেস। কলকাতায় কংগ্রেসের তিনটে জেলা কমিটি মিছিলের ডাক দিয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই মিছিলগুলির একটিতেও দেখা গেল না প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। অধীর আলাদা মিছিল করলেন কলকাতায়। এবং সেটা করলেন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে।
মধ্য কলকাতা, বড়বাজার এবং দক্ষিণ কলকাতা— এই তিনটে জেলা কংগ্রেস কমিটি শনিবার বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় কলকাতায়। বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা কলকাতা পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের নেতৃত্বে রামমন্দির থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের বিক্ষোভ মিছিল যাচ্ছে প্যারামাউন্ট নার্সিং হোম থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত। নেতৃত্বে থাকছেন সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের আর এক প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। আর মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের ডাকে মিছিল হচ্ছে রাজাবাজার থেকে মৌলালি পর্যন্ত।
মিছিলগুলির বিষয়ে জানানোর সময়ে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই মিছিলগুলি সোমেন মিত্রের নির্দেশে হচ্ছে। সন্তোষ পাঠকের নিজের এলাকায় যে মিছিল, স্বাভাবিক ভাবেই তার নেতৃত্বে সন্তোষ নিজে থাকছেন। দক্ষিণ কলকাতার মিছিলের নেতৃত্বে থাকছেন সোমেন অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রদীপ। আর মধ্য কলকাতার মিছিলটিতে থাকার কথা সোমেনের নিজেরই। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী বাদল ভট্টাচার্য আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘শশী তারুর আজ কলকাতায় রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সোমেন মিত্রের বৈঠক রয়েছে। বৈঠক সময় মতো শেষ হলে রাজাবাজার থেকে মৌলালিগামী মিছিলে সোমেন মিত্র যোগ দেবেন।’’
আরও পড়ুন: এক্সক্লুসিভ: অসমের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে মমতার উস্কানিতেই, বললেন অনুপ চেতিয়া
তিনসুকিয়ায় পাঁচ বাঙালিকে হত্যার প্রতিবাদে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলই সরব। প্রদেশ কংগ্রেস যে হেতু রাজ্য জুড়ে ‘কালা দিবস’ পালনের ডাক দিয়েছে, সে হেতু প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা নিজেরাও কোনও না কোনও মিছিলে থাকবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কলকাতায় থাকা সত্ত্বেও অধীর চৌধুরী কেন থাকছেন না জেলা কংগ্রেসগুলির ডাকা মিছিলে, তা নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে।
অধীর চৌধুরী এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ পার্ক স্ট্রিট থেকে একটি মিছিল শুরু করেন। বিদ্যুতের ‘অস্বাভাবিক’ মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত সে মিছিল যায় ধর্মতলা পর্যন্ত। ধর্মতলায় সভা করে অধীর চৌধুরী রাজ্য সরকারকে আক্রমণও করেন। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে এ দিন দেখা গিয়েছে বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, রানিনগরের বিধায়ক ফিরোজা বেগম, বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজি আবদুর রহিম, দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেস নেতা রাকেশ সিংহ, প্রদেশ কংগ্রেসের মানবাধিকার শাখার চেয়ারপার্সন সাইনা জাভেদদের।
কেন অধীরের মিছিলে দেখা গেল না সোমেনপন্থীদের, কেন কলকাতার বুকে আয়োজিত তিন বিক্ষোভ মিছিলে দেখা গেল না অধীরকে— তা নিয়ে কংগ্রেসের কোনও শিবিরই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নয়। তবে অধীর জমানায় প্রদেশ কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা এক নেতা প্রশ্ন তুললেন, ‘‘অধীরদা’কে কি আদৌ এই মিছিলগুলোয় ডাকা হয়েছে? মিছিলগুলোর বিষয়ে কেউ তাঁকে কিছু জানিয়েছেন কি?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy