বাজার সমীক্ষা করে মাছের জোগানের হিসাব নেওয়া তাঁদের কাজ। জেলায় মাছ উৎপাদনের তথ্যও তাঁদের মাধ্যমেই আসে মৎস্য দফতরে। অথচ তাঁরা নেই। অগত্যা মৎস্য দফতরে তথ্য সংগ্রহের কাজ বিশ বাঁও জলে।
পদটির পোশাকি নাম ‘ইনভেস্টিগেটর কাম কম্পিউটার অ্যাসিন্ট্যান্ট’। একশোটি পদ। অথচ আছেন মাত্র ২৮ জন। দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব মেদিনীপুর ও দার্জিলিং জেলায় এই পদে কোনও কর্মী নেই। দফতর সূত্রে খবর, এই তিনটি জেলায় মাছ সংক্রান্ত কোনও পরিসংখ্যানই নেই দফতরে।
কর্মী না থাকার জন্য সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্র নিয়োগের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা হচ্ছে।’’ রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে কত পুকুর রয়েছে, মৎস্যচাষির সংখ্যা কত, বিভিন্ন জলাশয়ে কী প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে— ইত্যাদি পরিসংখ্যান সংগ্রহ করেন ইনভেস্টিগেটর কাম কম্পিউটার অ্যাসিন্ট্যান্টরা। ওঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মৎস্য দফতরের তরফে প্রতি বছরে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন বছরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মাছের উৎপাদনের হার এই পুস্তিকায় লেখা থাকে। রাজ্যের মৎস্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা (মনিটরিং ইভালুয়েশন অ্যান্ড মার্কেটিং রিসার্চ) পি কে জানা বলেন, ‘‘এখন যা অবস্থা তাতে কর্মীর অভাবে ডেটাব্যাঙ্ক তৈরি করা যাচ্ছে না। কর্মী নিয়োগের জন্য উচ্চ মহলে জানানো হয়েছে।’’ শুধু ইনভেস্টিগেটর কাম কম্পিউটার অ্যাসিন্ট্যান্ট পদই নয়, রাজ্যে সব ব্লকে ফিশারিজ এক্সটেনশন অফিসারও (এফইও) নেই। রাজ্যে মোট ব্লকের সংখ্যা ৩৪১। কিন্তু মাত্র ১৭০টি ব্লকে এফইও নিযুক্ত রয়েছেন। মৎস্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শীঘ্রই ৪০ জন এফইও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
ফিশারিজ এক্সটেনশন অফিসার না থাকায় কী কী সমস্যা হচ্ছে?
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৎস্যচাষিদের উৎসাহ দানে নানান প্রকল্প রয়েছে। যেমন, মাছের চারাপোনা প্রকল্প, চাষিদের জাল, নৌকো-হাঁড়ি প্রদান প্রকল্প, মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জলাশয় বা মৎস্যক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়ন প্রকল্প। এফইও না থাকায় এই সমস্ত প্রকল্প রূপায়ণে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষের জন্য সরকারের তরফে অনুদান দেওয়া হয়। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ব্লকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক না থাকায় গ্রামে গিয়ে এই সমস্ত কাজে উৎসাহ দেওয়ার কাজ হচ্ছে না। সরকারি তরফে প্রচারপত্র দিয়ে দায় সারা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy