দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে লকেট। —নিজস্ব চিত্র।
ষাটপলশায় একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরপরই জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছে। তবে এখনও রিপোর্ট জমা পড়েনি। সে তদন্তে অবশ্য আস্থা রাখছেন না বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তুললেন কেন্দ্রীয় তদন্তের দাবি। গোটা ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাবেন বলেও সাফ জানিয়ে দিলেন।
শুক্রবার ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কাছে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল বিজেপি-র। সেখানে যোগ দিতে এসে ওই দাবি তোলেন লকেট। উল্লেখ্য, বেশ কিছু দিন ধরেই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে সরগরম ময়ূরেশ্বরের ষাটপলসা পঞ্চায়েত। এলাকাবাসীর অনেকের অভিযোগ, মজুরদের জন্য বরাদ্দ কাজ যন্ত্র দিয়ে করিয়েছেন জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জটিল মণ্ডলের ডান হাত হিসেবে পরিচিত সুরথ মণ্ডল ওরফে বাপ্পা। বছরের পর বছর ধরে মজুরদের পাসবই আটকে রেখে মোটা টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে বাপ্পার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গোটা বিষয়টি জানাজানি হয়। তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মজুররা। সব মহল থেকে তদন্তের দাবি ওঠে। তারপরেই বীরভূম জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে দেয়।
এ দিন স্মারকলিপি দিতে এসে ওই তদন্ত কমিটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লকেট। ষাটপলসা পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি-সহ আট দফা দাবিতে স্থানীয় বিজেপি মণ্ডল কমিটির পক্ষ থেকে বিডিও দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিডিও-র অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি নেন জয়েন্ট বিডিও আরিকুল ইসলাম। লকেটের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজ্য কমিটি সদস্য নির্মল কর্মকার, জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় প্রমুখ। এরপরেই লকেট যান ষাটপলসা ব্যাঙ্কের একটি শাখায়। ওই শাখা থেকেই ভুয়ো সই এবং টিপ ছাপ দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বাবলু দত্তের কাছে লকেট জানতে চান, মজুরদের হাজার হাজার টাকা কাদের দেওয়া হয়েছে? উত্তরে বাবলু দাবি করেন, সুপারভাইজাররা ওই সব টাকা তুলে নিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য সামলে নেন বাবলু। পরে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে কোনও কথা বলব না।’’ লকেটের অভিযোগ, যে ভাবে বছরের পর বছর ধরে মুজুরদের জব কার্ড এবং পাসবই আটকে রেখে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে, তাতে শুধু সুপারভাইজররা নন শাসকদলের নেতা থেকে সরকারি কর্মীদের একাংশও যুক্ত। লকেটের কথায়, ‘‘সে কারণেই জেলা প্রশাসনের তদন্তে আমাদের ভরসা নেই। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আরও উচ্চ পর্যায়েরে দাবি জানাব।’’ বিজেপি-র এই নেত্রীর অনুমান, দুর্নীতির অভিযোগ এড়াতে পারবেন না বলেই বিডিও সময় দিয়েও হাজির থাকেনি। জয়েন্ট বিডিও আরিকুল ইসলাম অবশ্য জানান, ‘‘একটি বিশেষ ট্রেনিঙে বিডিওকে সল্টলেকে যেতে হয়েছে। পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনের তদন্তের আওতাধীন। এর বেশি কিছু মন্তব্য করব না।’’
বিজেপি-র অভিযোগ, বিধানসভা ভোট শেষ হতেই শাসকদলের নেতাকর্মীরা টাকা তুলে দেদার দুর্নীতি শুরু হয়েছে। আর লকেটের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে গুছিয়ে নেওয়ার পর্ব শুরু হয়েছে তৃণমূলে। এটাই শাসকদলের সংস্কৃতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy