Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
জেলায় তৃণমূলনেত্রী

অধীর-বধই পাখির চোখ

কংগ্রেসের একদা গড় সেই মুর্শিদাবাদে এসে এ দিন বেলডাঙা এবং ভগবানগোলার দু’টি জনসভাতেই মমতা জানিয়ে গেলেন, অধীরকে হারানোই তাঁর প্রথম লক্ষ্য।

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: সোমবার ভগবানগোলার জনসভায়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: সোমবার ভগবানগোলার জনসভায়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা ও ভগবানগোলা  শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০১:০৮
Share: Save:

তাঁর লক্ষ্য যে অধীর-বধ, আকারে ইঙ্গিতে সে কথা বহু বার শুনিয়ে গিয়েছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারে প্রথমবার অধীরের গড় মুর্শিদাবাদে এসে সে কথাই সোমবার স্পষ্ট করে গেলেন তৃমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধীরকে পরাজিত করলে, বহরমপুরের মানুষের কাছে তিনি যে কল্পতরু হয়ে উঠতেও কসুর করবেন না, খোলাখুলিই জানিয়ে গেলেন তিনি, ‘‘মনে রাখবেন, অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে আসনটি অপূর্ব সরকারের হাতে তুলে দিলে বহরমপুর যা চাইবে, তাই দেব।’’

সেই ‘রাম’ নেই, ‘অযোধ্যা’তেও ঢলে পড়েছে অস্তগামী আলো— কংগ্রেসের একদা গড় সেই মুর্শিদাবাদে এসে এ দিন বেলডাঙা এবং ভগবানগোলার দু’টি জনসভাতেই মমতা জানিয়ে গেলেন, অধীরকে হারানোই তাঁর প্রথম লক্ষ্য।

বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ নিয়েও কটাক্ষ করতেও রাশ টানলেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বহরমপুরের কী এক বড় নেতা রে! বহরমপুরে ক’দিন থাকে? আমাকে ঘাঁটিও না। আমি সব জানি। কলকাতায় কোথায় থাকে জিজ্ঞাসা করুন তাঁকে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে বলা উচিত নয়। তবু বলছি, আগে একটা স্ত্রী ছিল, মারা গিয়েছেন। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া অঙ্গীকরপত্রে সে কথা উল্লেখও করেননি। জোড়া খুন থেকে শুরু করে একাধিক মামলা ঝুলছে। আমি সব জানি। আমাকে দিয়ে প্যান্ডোরার বাক্স খুলিয়ো না।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তিনি বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী সকালে বিজেপি, দুপুরে কংগ্রেস, রাতে সিপিএম করেন। বিজেপি’র সঙ্গে আঁতাতের কারণে অধীরের বিরুদ্ধে সিবিআই লাগানো হয়নি। মনে রাখবেন, দুই দিকে দুই কলাগাছ। মধ্যেখানে অধীররাজ।’’

এ দিন ভগবানগোলার সভায় তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের চিরকাল বোঝাপড়া ছিল। সকালে সিপিএম করে এরা, দুপুরে কংগ্রেস করে, রাতে বিজেপি। আমার এটা পছন্দ ছিল না। সে জন্য তৃণমূল তৈরি করেছিলাম।’’ তাঁর প্রশ্ন— ‘‘এখনও কেন সিপিএম থাকবে? ওরা তো এখন বিজেপি করে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাম আর রামের মধ্যে ঢুকেছে কংগ্রেসের শ্যাম।’’

কংগ্রেসের দিকে তাঁর তির— ‘‘কংগ্রেস কখনও কখনও গটআপ ম্যাচ করে ফেলে বলেই বিজেপি এতটা শক্তিশালী হতে পেরেছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে সাহস করে কথা বলার লোক কম। মোদীবাবুর বিরুদ্ধে বললে সিবিআই ঢুকিয়ে দেবে, আয়কর লাগিয়ে দেবে, ইডি পাঠিয়ে দেবে, কাস্টমস পাঠিয়ে দেবে। তাই ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। আমি তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলি। তার কারণ এই মাটিতে আমার জন্ম। আমার কাউকে ভয়-টয় পাই না।’’

নিজের লক্ষ্য স্পষ্ট করে মমতা তাই জানিয়ে দিচ্ছেন— ‘‘এনআরসি হবে না, সিটিজেনশিপ অ্যামেনমেন্ড বিল হবে না, ভাগাভাগি, দাঙ্গা হবে না, তরোয়াল দিয়ে মাথা কাটার রাজনীতি হবে না।’’ এমনই এক সরকার গড়া পাখির চোখ করেছে তাঁর ধর্ম নিরপেক্ষ জোট।

(প্রতিবেদক: অনল আবেদিন, সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়, সামসুদ্দিন বিশ্বাস ও মৃন্ময় সরকার)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE