বারাসতে বিজেপি নেতার বাড়ি ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বারাসতে বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য অরবিন্দ মেননের গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে এমন অভিযোগই জানাল বিজেপি। বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের অভিযোগ, শুধু মেননের গাড়ি ভাঙচুর নয়, তাঁদের জেলা স্তরের এক নেতার বাড়িও ভাঙচুর করেছে তৃণমূল। বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার যদিও পাল্টা অভিযোগ করেন, বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে টাকা ছড়িয়ে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুকুল। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারের অবিলম্বে অপসারণ দাবি করেন। গোটা ঘটনায় পুলিশ অরবিন্দ মেননের সঙ্গে থাকা পাঁচটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং গ্রেফতার করেছে কনভয়ের গাড়ির তিন চালককে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার গভীর রাতে বারাসতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বিজেপির দাবি, সোমবার রাতে টাকি রোডের একটি হোটেলে তাঁদের একটি দলীয় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বিজেপির অভিযোগ, সেই বৈঠক ভেস্তে দিতেই বারাসত থানার পুলিশ ওই হোটেলে তল্লাশির নামে হানা দেয়। ফলে তাঁদের স্থান পরিবর্তন করতে হয়। তাঁরা স্থানীয় বিজেপি নেতা তুহিন মণ্ডলের বারাসতের বাড়িতে বৈঠক শুরু করেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বিজেপির দাবি, বৈঠকে একাধিক জাতীয় পর্যায়ের বিজেপি নেতা উপস্থিত থাকায় অনেক গাড়ি ছিল। সেই ভিড় দেখেই স্থানীয় তৃণণূল কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হতে শুরু করেন তুহিনের বাড়ির সামনে।
তুহিনের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা তাঁদের পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং তাঁর বাড়িতেও হামলা চালায়। বিজেপি সূত্রের খবর, পরিস্থিতি ঘোরালো দেখে অরবিন্দ মেনন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে গোটা ঘটনা জানান। তাঁদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ তুহিনের বাড়ি গিয়ে বিজেপি নেতাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরও পডু়ন: অমিতের রোড শো ঘিরে ধুন্ধুমার, অবরোধ লেনিন সরণীতে, অবরুদ্ধ মধ্য কলকাতা
ততক্ষণে থানা চত্বরে পৌঁছে যান কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি তাঁর শ’খানেক অনুগামী নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন থানার সামনে। কাকলি অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে বারাসতে টাকা ছড়ানোর চেষ্টা করছে এবং সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।” অরবিন্দ মেননের সঙ্গে ছিলেন গুজরাত বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতিরুতভিজ পটেল।
অশান্তির খবর পেয়ে রাতেই বারাসত থানায় হাজির হন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস আসলে হারের ভয় পাচ্ছে। তাই এ রকম ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে এবং গুন্ডামি করছে।” তিনি জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনে গোটা ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ জানাব। জেলা পুলিশ সুপারের অপসারণ চাইব কারণ তিনি শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন।”
আরও পডু়ন: সম্ভাবনাই নেই, কেসিআর-এর তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনায় জল ঢাললেন স্ট্যালিন
সোমবার রাতের ভাঙচুরের ঘটনাতে কেউ গ্রেফতার না হলেও, মঙ্গলবার সকালে পুলিশ স্বতপ্রণোদিত মামলা রুজু করে অরবিন্দ মেননের কনভয়ের গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ওই কনভয়ের একটি গাড়িতে বেআইনি ভাবে সরকারি তিন তারা ব্যবহার করা হয়েছে। বিধি ভেঙেছে বাকি গাড়িগুলো, দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ ধারায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পাঁচটি গাড়ি এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ইন্দ্রদেব যাদব, রাজু সিংহ এবং প্রভাসকুমার রায় নামে তিন গাড়ি চালককে। প্রায় ভোররাতে পুলিশ অরবিন্দ মেননকে দোলতলা থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের গাড়িতে তুলে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy