Advertisement
০৯ মে ২০২৪

জোটভঙ্গে তরজা, বিস্মিত সূর্য-অধীর-ডালুরা

আচমকাই রবিবার রাত থেকে আবার বদলে গেল গোটা সমীকরণ!

অধীর চৌধুরী এবং সূর্যকান্ত মিশ্র। —ফাইল চিত্র।

অধীর চৌধুরী এবং সূর্যকান্ত মিশ্র। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৮
Share: Save:

তিন বছর আগে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার পথে এগিয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে ফিরে এসে সেই পথেই এগোচ্ছিলেন সোমেন মিত্র। আচমকাই রবিবার রাত থেকে আবার বদলে গেল গোটা সমীকরণ! প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আসনে বসে সোমেনবাবুই পুরনো কায়দায় ফের কটাক্ষ করতে শুরু করলেন সিপিএমকে। পাল্টা কিছু ফিরিয়ে দিল সিপিএমও।

কংগ্রেসের অভিযোগ, সিপিএম তার শরিকদের বাঁচিয়ে জোর করে কিছু সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। রফার আলোচনা চলাকালীন ২৫ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে জোট-শর্ত ভেঙেছে বামেরাই। এমনকি, বীরভূম বা দার্জিলিঙের মতো আসনে সিপিএম তাদের প্রস্তাবিত প্রার্থীকে মেনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কংগ্রেসকে! সোমেনবাবুর কথায়, ‘‘আমি বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজছি, কোথা থেকে মেয়ে নেব, সেই ঘরটাও ওরা ঠিক করে দেবে!’’

সিপিএম অবশ্য সরাসরি তরজায় না গিয়ে সোমেনবাবুদের একা চলার সিদ্ধান্তের ‘নেপথ্য কারণে’র দিকে ইঙ্গিত করেছে। তবে একই সঙ্গে তাদের সিদ্ধান্ত, কংগ্রেস নিয়ে আর মাথা না ঘামিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় সর্বশক্তি দিয়ে লোকসভা ভোটে লড়াকেই এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বামফ্রন্টের বৈঠক বসছে আজ, সোমবার। সেখানেই সম্ভবত বাকি ১৭ আসনের জন্য প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত জট ছাড়ানোর আলোচনায় ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে। পরের দিনই কংগ্রেস মত আমূল বদলে ফেলায় তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা স্তম্ভিত! সূর্যবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ ভোট একজোট করার আহ্বান প্রথম জানিয়েছিলাম আমরাই। সেই পথে কেউ কাঁটা হয়ে দাঁড়ালে বুঝতে হবে বিজেপি ও তৃণমূলের সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষ ভোট একজোটের চেষ্টা কারা বানচাল করছে? আম্বানিদের টাকা তো এ রাজ্যেও খাটছে!’’

সূর্যবাবুদের মতোই জোটের পক্ষে ছিলেন কংগ্রেসের তিন বর্তমান সাংসদ অধীরবাবু, আবু হাসেম (ডালু) চৌধুরী ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। জোট ভেস্তে যাওয়ায় হতাশ তাঁরাও। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীরবাবুর কথায়, ‘‘চেয়েছিলাম জোটটা হোক। তা হলে ধর্মনিরপেক্ষ পরিসরটা আমাদের হাতে থাকত। তবে বামফ্রন্টও আগে ২৫ প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলে পারত।’’ বহরমপুরের সাংসদের সংযোজন, ‘‘রাজনীতি সব সময় পাটিগণিত নয়। ভোটের অঙ্কে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের পাওয়া উচিত। কিন্তু যুক্তির অঙ্কে সিপিএমের। দু’দলের পুরনো সম্পর্কের নিরিখে মুর্শিদাবাদে ভোট ‘ট্রান্সফার’ সমস্যা হবে জেনেও কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজটা শুরু করেছিলাম। এখন আবার উল্টে গেল!’’ বিধান ভবনে পরপর দু’দিন বৈঠকে এসে ঘনিষ্ঠ মহলে ডালুবাবু ও অভিজিৎবাবুও বলে গিয়েছেন, তাঁদের আসন বার করার জন্য বামেদের সঙ্গে জোট দরকার ছিল। দলের অন্দরে কংগ্রেসের অনেকে বলছেন, এই করতে গিয়ে দলটাই উঠে যেতে বসল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE