মাথাভাঙায় পুলিশি টহল। — নিজস্ব চিত্র।
সরাসরি নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানকে আঙুল তুলে হুমকি ‘বুথে ঢুকেছেন কেন?’ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হুমকি দেওয়ার সেই ভিডিয়ো রীতিমতো ভাইরাল হল। এ দিন প্রথম দফার ভোটে একটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে হুমকি দিতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথকে। এ দিকে, এ দিন সকাল দশটা পর্যন্ত এ রাজ্যে কমিশনের অফিসে মোট ৪৬২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৪৩৬টি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেছে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। এ রাজ্যে সকাল এগারোটা পর্যন্ত ৩৮.০৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। এরই মধ্যে দিনহাটায় একটি বুথে ঢুকে ইভিএম, ভিভিপ্যাট ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হল। এই ঘটনায় বিজেপি-তৃণমূল একে অপরের দিকে অভিযোগ তুলেছে।
অন্যদিকে আবার তুফানগঞ্জে বিজেপি কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তুফানগঞ্জের ধলপলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যদিও বিজেপির তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ভোটে নাক গলানোর অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। সংবাদমাধ্যমকে তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, নিয়ম না মেনে বুথের মধ্যে ঢুকে পড়ছেন বিএসএফ জওয়ানরা। পাশাপাশি ইভিএম কারচুপির অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশনে জানালেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁর অভিযোগ জেলাশাসককে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যের পুলিশ দিয়ে ভোট করালে অনেক সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করানো সম্ভব হত।
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে হুমকি তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের।— নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘিরে উত্তপ্ত দিনহাটা। তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের মারধরের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তৃণমূল কর্মীদের হামলায় এক বিজেপি সমর্থকের মাথা ফেটেছে বলে জানা যাচ্ছে। বিজেপি সমর্থকদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীও জখম হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনা জানার পর প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আজ ১৭টি রাজ্য এবং ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও প্রথম দফার ভোটগ্রহণ চলছে। যে ৭টি দফায় ভোট নেওয়া হবে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে, সেই ৭টি দফাতেই ভোট হবে বাংলার কোনও না কোনও আসনে। আজ তার শুরু উত্তরবঙ্গ থেকে।
মাথাভাঙার একটি বুথে উত্তেজনা।—নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার— পশ্চিমবঙ্গের এই দুটি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। দুই আসনেই যে মূল লড়াই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সংশয় কমই। শুধু এই দুই কেন্দ্রে অবশ্য নয়, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ আসনেই এ বার মূল লড়াই রাজ্যের শাসক দল এবং দেশের শাসক দলের মধ্যে।
দুই-একটা বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ছাড়া মোটের উপর শান্তিতেই চলছে ভোটপর্ব। দু-একটা বুথে ইভিএম খারাপ হওয়ায় দেরিতে শুরু হয় ভোট গ্রহণ।
কোচবিহারের একটি বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন। ছবি— পিটিআই।
প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে বিজেপির উত্থানের পরে এই প্রথম লোকসভা নির্বাচনের মুখোমুখি পশ্চিমবঙ্গ। তাই বাংলার তো বটেই, গোটা দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের নজরই বিশেষ ভাবে থাকছে বাংলার দিকে।
কোচবিহারের বিদায়ী সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে এ বার টিকিট দেয়নি তৃণমূল। টিকিট দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতা তথা বাম জমানার মন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীকে। আর বিজেপির টিকিটে লড়ছেন জেলা তৃণমূলের এককালের দাপুটে যুবনেতা নিশীথ প্রামানিক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আলিপুরদুয়ারে অবশ্য এ বারও প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকে। আর বিজেপির টিকিটে লড়ছেন আদিবাসী আন্দোলনের অত্যন্ত পরিচিত মুখ জন বার্লা।
দুই কেন্দ্রেই কড়া টক্কর তৃণমূল ও বিজেপির। এলাকায় উত্তেজনাও যথেষ্ট। তাই যত বেশি সংখ্যক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বন্দোবস্ত করছে নির্বাচন কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy