Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
দলনেত্রীর মঞ্চ ভাঙার দুঃস্বপ্ন ফিরল পার্থের কথায়

আবার ভাঙবে না তো!

বৃহস্পতিবার গোপীবল্লভপুরের যাত্রা ময়দানে তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় হচ্ছিল এ সব কিছুই। কিন্তু মঞ্চে এমন ভিড় এ দিন যেন সহ্য করতে পারছিলেন না তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বছর পনেরো আগের সে দিন মমতা (বাঁ দিকে)। বৃহস্পতিবার সেই মাঠের সভাতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র, নিজস্ব িচত্র

বছর পনেরো আগের সে দিন মমতা (বাঁ দিকে)। বৃহস্পতিবার সেই মাঠের সভাতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র, নিজস্ব িচত্র

কিংশুক গুপ্ত
গোপীবল্লভপুর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৩
Share: Save:

ছবিটা নতুন কিছু নয়। নেতা মঞ্চে উঠতেই ভিড় বাড়তে শুরু করল। মাঝারি, ছোট নেতারা সকলেই শীর্ষনেতৃত্বের কাছাকাছি আসতে চান। কারও আব্দার নিজস্বী।

বৃহস্পতিবার গোপীবল্লভপুরের যাত্রা ময়দানে তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় হচ্ছিল এ সব কিছুই। কিন্তু মঞ্চে এমন ভিড় এ দিন যেন সহ্য করতে পারছিলেন না তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। চোখে মুখে ফুটে উঠছিল ‘অস্বস্তি’।

শেষমেশ আর থাকতে পারলেন না। ধমক দিয়ে অনেককেই নামিয়ে দিলেন মঞ্চ থেকে।

অস্বস্তির কারণ পার্থ ব্যাখ্যা করলেন নিজেই। বললেন, ‘‘এই মাঠেই নেত্রীর সভা হয়েছিল ২০০৪ সালে। প্রবল বর্ষণে আমাদের মঞ্চ ভেঙে যায়। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর আহত হন। আমরাও অল্পবিস্তর আহত হয়েছিলাম। সেই দুঃস্বপ্ন কিন্তু এখনও আমাদের মধ্যে রয়েছে। প্রথমে এসেই দেখি মঞ্চটা ঠিক আছে তো! আবার ভাঙবে না তো!’’

সভার আয়োজক ছিল যুব তৃণমূল ও সহযোগিতায় ছিল জেলা টিএমসিপি। ফলে, দু’টি সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও মঞ্চে ভিড় করেছিলেন। দুপুর সওয়া ২ টো নাগাদ পার্থ মঞ্চে এসে বসার পরে ভিড় দেখে বিরক্ত হন। মঞ্চে যুব-ছাত্র কর্মীদের ভিড় কমাতে নির্দেশ দেন তিনি। এরপরই মঞ্চ থেকে ছাত্র-যুব কর্মীরা নেমে যান। শুরু হয় অন্য নেতাদের বক্তৃতার পর্ব। তা মিটতেই দলবদলের পালা। সে সময়ে দলত্যাগীদের সঙ্গে তাঁদের সঙ্গীপাথীরা উঠে পড়েন মঞ্চে। তৃণমূলের পতাকা দলত্যাগীদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় বারকয়েক মঞ্চের নীচের দিকে তাকাতে দেখা যায় পার্থকে। যোগদান পর্ব শেষ হতে বক্তৃতা শুরু করেই প্রথমে ‘অস্বস্তি’র কারণটা জানিয়ে দেন পার্থ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

২০০৪ সালের ৯ অগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলন দিবস’ উপলক্ষে যাত্রা ময়দানে সিপিএমের ‘অপশাসনে’র বিরুদ্ধে মমতার জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভা চলাকালীন মঞ্চ ভেঙে জখম হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। জখম হয়েছিলেন দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী ও সভায় আসা লোকজনও। ওই ঘটনার পুলিশের রিপোর্ট ছিল, মঞ্চে অনেক নেতা-কর্মী উঠে যাওয়ায় এবং সভা চলাকালীন প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মাটি নরম হয়ে গিয়ে মঞ্চ ভেঙে পড়েছিল। যদিও সে সময়ে এর পিছনে সিপিএম ও পুলিশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল।

২০০৪ সালের পরে মমতা আর যাত্রা ময়দানে সভা করেননি। টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সত্যরঞ্জন বারিক বলেন, ‘‘শক্তপোক্ত মঞ্চ করা হয়েছিল। মঞ্চে বেশি লোকজন উঠে পড়েছিলে। পরে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE