Advertisement
১০ মে ২০২৪

কেন্দ্রে এ বার তৃণমূল সরকার: মমতা

লোকসভা গঠনে বাংলাই নেতৃত্ব দেবে বলে আগেও দাবি করেছেন মমতা। মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোট চলাকালীন হাওড়া ও হুগলিতে ভোটপ্রচারে মমতা সরাসরিই বললেন, ‘‘এ রাজ্যে ৪২-এ ৪২ পেলে দিল্লিতে তৃণমূলের সরকার গঠন করব।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২৩
Share: Save:

‘‘দেশে তৃতীয় দফা ভোটের পরে বিজেপির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেল। এর পরে কেন্দ্রে তৃণমূলই সরকার গড়বে’’— মঙ্গলবার এমনই দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

লোকসভা গঠনে বাংলাই নেতৃত্ব দেবে বলে আগেও দাবি করেছেন মমতা। মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোট চলাকালীন হাওড়া ও হুগলিতে ভোটপ্রচারে মমতা সরাসরিই বললেন, ‘‘এ রাজ্যে ৪২-এ ৪২ পেলে দিল্লিতে তৃণমূলের সরকার গঠন করব।’’ এ রাজ্যে বিজেপিকে কোনও ভাবেই সুযোগ না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে জগৎবল্লভপুরের সভায় মমতা বলেন, ‘‘বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না।’’

মমতার সরকারকে বিজেপি ‘ভয়’ পায় বলেই মোদী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ঘনঘন এ রাজ্যে ভোটপ্রচারে আসছেন বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মো‌দীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘এই বাংলাই তোমাকে টাইট দেবে। বাংলায় আমি আছি বলে এত ভয়!’’

ঘটনাচক্রে, এ দিন মমতার তিনটি সভার অব্যবহিত পরেই আসানসোলে মোদীর সভা শুরু হয়। সেই সভা থেকে মোদী মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ‘বাসনা’কে কটাক্ষ করেন। যার আঁচ করে আগেই মমতা মোদীকে বিঁধে বলেন, ‘‘তুমি যত আসবে, আমি তত এগোব। তত বেশি ভোটে জিতব।’’

বাংলা ছাড়াও দেশের অন্যান্য রাজ্যে এ বার বিজেপির ভূমিকা বিশেষ সদর্থক হবে না বলে বেশ কিছুদিন ধরেই একটি পরিসংখ্যান দিচ্ছেন মমতা। এ দিনও সেই তথ্যই জানিয়ে তিনি দাবি করেন, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, ওড়িশায় বিজেপি শূন্য। পঞ্জাব, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যেও বিজেপি বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না। উত্তরপ্রদেশে প্রাপ্ত আসন ৭৩ থেকে কমে ১৩ হতে পারে বলে মমতার ধারণা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ ভাবে আসন হারানোর আতঙ্কে বাংলায় অধিকাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করে বিজেপি ভোট করাতে চাইছে বলেও অভিযোগ করছেন মমতা। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় মমতা রিগিং করতে না পেরে বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হচ্ছেন বলে সোমবারই পাল্টা অভিযোগ করেছেন অমিত শাহ। তার জবাবে বিজেপি-শাসিত গুজরাত, ত্রিপুরা, অসমের উল্লেখ করে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘ ত্রিপুরায় কী করেছ? চ্যালেঞ্জ করে বলছি, পুরোটাই রিগিং হয়। গুজরাতে কী হচ্ছে, জবাব দাও। উত্তরপ্রদেশে ক’জন অফিসার বদল করেছ? বিহারে, অসমে কী করেছ?’’

এই ভাবে অফিসার বদল করিয়ে এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর জবাব আগামী দিনে ক্ষমতায় এসে মমতা নেবেন বলে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কাল যখন তুমি হেরে যাবে, গুজরাতে ভোট করবে, একই জিনিস ঘটতে পারে কিন্তু। তখন বুঝবে, ঠ্যালার নামা বাবাজি।’’

এ রাজ্যে বারবার সভা করতে এলেও মোদী-শাহের সভায় ভিড় হচ্ছে না বলে কটাক্ষ করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা দেশে বিজেপির কোনও সভায় লোক হচ্ছে না। বাংলায় এক একটা সভায় কত টাকা খরচ করছে, তার কোনও হিসাব নেই, মোদীর ছবি দেখালে টিভিতে টিআরপিও কমে গিয়েছে।’’ বিজেপির গ্যাস বেলুন ফেটে গিয়েছে বলে মন্তব্যও করেন তিনি। কোনও ভাবে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাতে বিজেপির আখেরে সুবিধা না হয়, সে জন্য বারবারই প্রচারে ভোটারদের সতর্ক করছেন তৃণমূল নেত্রী। এ দিনও একই সুরে সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE