ফাইল চিত্র।
সকাল থেকে সাজসাজ রব ছিল। বিকেল থেকে বাজছিল নহবতের সুর। সোমবার দুপুর গড়াতেই কোচবিহার মদনমোহন মন্দির চত্বরে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থীদের। এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুজো দিতে আসবেন জেনে তাঁদের অনেকে মন্দিরের মাঠে অপেক্ষাও করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন মন্দিরে এলেন তখন ঘড়িতে বিকেল প্রায় পাঁচটা। তার কিছু ক্ষণ আগেই অবশ্য রাজাদের কুলদেবতার পুজোর জন্য ‘ডালা’ও মন্দিরে বিগ্রহের সামনে রাখা হয়। মন্দিরে ঢুকে পুরোহিতের পাশে দাঁড়ান তিনি। করজোড়ে মদনমোহন প্রণাম করেন। পুজো দিয়ে মন্দিরের বারান্দা থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় কিছু ক্ষণ সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আরতি দেখেন।
মুখ্যমন্ত্রী পুজো দেবেন, তাই ‘ডালা’ তৈরি করে রাখা হয়েছিল মদনমোহন মন্দিরে। পুজোর নানা উপকরণ সুদৃশ্য মোড়কের ভেতরে রাখা একটি কাগজে লেখা ছিল , ‘মমতা ব্যানার্জী’, অন্যটিতে ‘ শাণ্ডিল্য’ গোত্র। সেই মতোই পুজো দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন পুরোহিত। পাশে দাঁড়ানো মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য পুরোহিতকে বলে আরও একটি গোত্র জুড়লেন, ‘ মা – মাটি-মানুষ’।
মদনমোহন মন্দিরে পুজো সেরে রাসমেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ওই বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “উনি (পুরোহিত) একটা পুজো দিচ্ছিলেন শাণ্ডিল্য গোত্র। যেহেতু বন্দ্যোপাধ্যাদের শান্ডিল্য গোত্র হয়। আমি বললাম আরেকটা গোত্র যোগ করুন। বললেন কী? আমি বললাম মা-মাটি-মানুষ গোত্র।”
ওই গোত্র সংযোজনের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,“আমি যখন পুজো দিই, আমি সবার জন্য করি।”
ট্রাস্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পুজোর ‘ডালা’ তৈরির দায়িত্ব ছিল পুলিশের উপরে। মুখ্যমন্ত্রীও মদনমোহনের জন্য পোশাক এনেছিলেন। সব দিয়েই রাজাদের কুলদেবতার পুজো হয়। এদিন মা ভবানী, মা তারা, মা কালী মন্দিরেও পুজো দেওয়া হয়। মা কালী বিগ্রহ দর্শনে ওই ঘরেও যান মুখ্যমন্ত্রী। মন্দির চত্বরের অন্য ঘরের বিগ্রহও ঘুরে দেখেছেন।
এ দিন প্রায় তিরিশ মিনিট মন্দিরে কাটিয়েছেন তিনি। পরে রাসমেলার মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেক দিন ধরে আমার জীবনের সাধ ছিল রাসমেলা দেখবার। তা পূর্ণ হল।”
কোচবিহারের রাসমেলায় তিনি যে অভিভূত, তাও স্পষ্ট হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। মমতা বলেন, “কোচবিহারের রাসমেলা বহুদিনের পুরাতন। ঐতিহাসিক, ধার্মিক। বলতে পারেন ধর্মে, রংয়ে, বর্ণে এ এক অদ্ভুত অনুভূতি।” তাঁর সংযোজন,মেলাতে গেলে পদপিষ্ট হওয়ার ভয় থাকে।তাই সাধারণত যাই না। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে এ দিন প্রচণ্ড ভিড় হয়েছিল রাসমনেলা ও মদনমোহন মন্দির চত্বরে। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল সর্বত্রই। সেই সঙ্গে অবশ্য খেয়াল করা হয়েছে, কোনও দর্শনার্থীর যাতে অসুবিধা না হয়, সে দিকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy