Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এত দায়িত্ব দিলাম, ফেল করলি! মমতার তোপের মুখে অরূপ

এদিন ফলাফল পর্যালোচনার সময় তৃণমূলনেত্রী প্রথমেই ভর্ৎসনা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে।  এছাড়াও সমালোচিত হন মন্ত্রী অসীমা পাত্র, তপন দাশগুপ্ত এমনকী বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলও।

নেত্রী: কালীঘাটের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নেত্রী: কালীঘাটের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৯ ০৪:১৬
Share: Save:

দলের খারাপ ফলের কারণ চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোপর মুখে পড়ছেন একের পর এক মন্ত্রী ও নেতা। তাঁরা যে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেননি, দলের দূর্বলতাগুলি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং শীর্ষনেতৃত্বকেও বাস্তব অবস্থা ঠিক মতো জানাননি, শুক্রবারের দলীয় বৈঠকে দলীয় বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দেন মমতা।

এদিন ফলাফল পর্যালোচনার সময় তৃণমূলনেত্রী প্রথমেই ভর্ৎসনা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। এছাড়াও সমালোচিত হন মন্ত্রী অসীমা পাত্র, তপন দাশগুপ্ত এমনকী বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলও। এ ছাড়াও আরও একাধিক কেন্দ্রে স্থানীয় ও ভারপ্রাপ্ত নেতাদের কাজেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা।

উত্তরবঙ্গের যে সব জেলায় সংগঠনের অরূপ দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে হেরে গিয়েছে তৃণমূল। তাঁর হাতে থাকা হুগলির একটি এবং দুই বর্ধমানের দুটি আসনে হেরেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। এই ফলের উল্লেখ করে মমতা অরূপকে বলেন, ‘‘এতগুলো জেলার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, ভাল করে কাজ কর। যখনই জিজ্ঞেস করেছি, বলেছিস, সব ঠিক আছে। কিন্তু একেবারে ফেল করলি।’’ অরূপের দায়িত্বে থাকা দার্জিলিং সম্পর্কেও সব তথ্য তাঁকে জানানো হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিংসহ এই আসনগুলি সম্পর্কে তাঁকে সবসময় সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি। এই ব্যর্থতার জন্য তিনি অরূপকেই দায়ী করেছেন।

একইভাবে এদিন বীরভূমের জেলা সভাপতির নাম করেও অসন্তোষ জানিয়েছেন মমতা। বৈঠকে অনুব্রতের কাছে বীরভূমের বহু তৃণমূলের হারের উল্লেখ করে অনুব্রতের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘‘তোমার ওখানেও তো বহু জায়গায় আমরা হেরে গিয়েছি। ভাল করে কাজ হয়নি। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে থাকা নদিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নদিয়ার রাণাঘাট আসন হেরে গিয়েছে তৃণমূল। পার্থের কাছ থেকে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব আগেই দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে।

হুগলির হারে বিস্মিত মমতা এদিন জেলার দুই মন্ত্রীর কাছেও ব্যাখ্যা চান। জবাবে ধনেখালির বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত করে বলে ওঠেন, তাঁকে হুগলিতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তাঁকে থামিয়েই মমতা তখন বলেন, এ কেমন নেতা, যিনি নিজের জেলায় ঘুরতে পারেন না। মেদিনীপুর আসনে হারের উল্লেখ করে জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কাজেও অসন্তোষ জানিয়েছেন মমতা। মালদহ জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোলাম রব্বানি ও সাধন পান্ডেকে।

রাজ্য স্তরে এই আলোচনা সেরে আগামী সপ্তাহ থেকে জেলাভিত্তিক পর্যালোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। ৭ জুন প্রথম বৈঠকে তিনি হুগলির নেতাদের ডেকেছেন। তারপর প্রয়োজনমতো আরও সাংগঠনিক রদবদল করা হতে পারে।

এদিনের বৈঠকে দলের প্রচারের দায়িত্বও ভাগ করে দিয়েছন মমতা। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্রকে দলের মুখপাত্র হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। ফের একবার দলের গুরুত্বপূর্ম নেতাদের নির্দিষ্ট দিনে তৃণমূল ভবনে বসে দলের কাজ করতে বলেছেন মমতা। জেলা ও তার নীচেরতলায়ও নিয়মিত দলের অফিসে বসে জনসংযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE